আগামী বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হবে ২০২২ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ (Under 19 World Cup)। এই টুর্নামেন্টের জন্য ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ভারত। এই দলে সুযোগ পেয়েছেন প্রতিশ্রুতিমান ব্যাটার সিদ্ধার্থ যাদবও। ভারতের অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল ঘোষণার পরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন সিদ্ধার্থ যাদব।
advertisement
তরুণ এই ক্রিকেটারের বাবা গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) কোটগাঁওয়ে একটি মুদি দোকান চালান। সিদ্ধার্থ অনেক সংগ্রাম করে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন ভারতের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলে। একজন বাঁ-হাতি টপ অর্ডার ব্যাটার সিদ্ধার্থ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া কাপের (অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ) জন্যও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
ভারতের বিশ্বকাপ দলে বাঁ-হাতি ব্যাটার সিদ্ধার্থ জায়গা পেতেই গাজিয়াবাদের কোটগাঁওয়ের মুদি দোকানটি খবরের শিরোনামে চলে এসেছে। সিদ্ধার্থের বাবা শ্রাবণ যাদব একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যখন থেকে তার ছেলে ভারতীয় দলে নির্বাচিত হয়েছে, তখন থেকেই দোকানে তাকে অভিনন্দন জানাতে লোকজনের ঢল নেমেছে।
সেখানেই সিদ্ধার্থের বাবা জানান, ছেলের লড়াইয়ের গল্প। সিদ্ধার্থের গল্পটিও সেই খেলোয়াড়দের মতো, যাদের ছোট শহরে প্রাথমিক স্তরে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। শ্রাবণ যাদব বলেন, সে (সিদ্ধার্থ) যখন ছোট ছিল, আমার স্বপ্ন ছিল তাকে ক্রিকেট খেলতে দেখার। প্রথমবার যখন বাঁ-হাতে ব্যাট নিয়েছিল তখন তার মা বলেছিল, ওটা উল্টো। আমি বলেছিলাম এটাই হবে সঠিক।
তারপর থেকে ও শুধু বাঁ-হাতেই ব্যাট করছে। সিদ্ধার্থের ক্রিকেটার হওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল ৮ বছর বয়সে। ছেলেকে এখানে আনতে বাবা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। শুরুর দিনগুলোর কথা মনে করে শ্রাবণ যাদব বলেন, প্রতিদিন বিকেলে আমি আমার ছেলেকে কাছের মাঠে ব্যাটিং অনুশীলন করতে নিয়ে যেতাম। দোকান বন্ধ করে ৩ ঘণ্টা ব্যাটিং অনুশীলন করাতাম তাকে। দুপুর ২টায় দোকান বন্ধ হয়ে যেত। সন্ধ্যা ছয়টায় ফিরে এসে আবার দোকান খুলতাম।
সিদ্ধার্থের পরিবারে সবাই ছেলের ক্রিকেট খেলাকে সমর্থন করেনি। সিদ্ধার্থ বলেছেন যে, দাদী চেয়েছিলেন আমি পড়াশোনায় মনোযোগ দিই। তারা মনে করত, আমি পড়াশুনা না করলে আমার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে, আমি ভবঘুরে হয়ে যাব। কিন্তু আমার বাবা দৃঢ় ছিলেন। এটা তার স্বপ্ন ছিল, যা আমাকে পূরণ করতে হয়েছে।
তবে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে খুশি হলেও আসল লক্ষ্য ভারতের হয়ে পারফর্ম করা। নিজের জায়গা তৈরি করা। তবেই এই লড়াইয়ের মূল্য পাওয়া যাবে মনে করেন তরুণ সিদ্ধার্থ। মিস করেন তারক সিনহাকে। ঋষভ পন্থকে কোচিং করানো বাঙালি কোচ কয়েক মাস আগেই গত হয়েছেন। সিদ্ধার্থ কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন তারক সিনহার দিল্লির ক্লাব সনেটে।