ম্যাচ-প্রতি সাতশো টাকা আয় করার জন্য ছুটতে হত জম্মুর বিভিন্ন প্রান্তে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার হিসেবে কখনও ঘরে আনতেন মিক্সার, কখনও হেয়ার ড্রায়ার। স্কুল থেকে ফিরে কোনও রকমে বাড়িতে ব্যাগ রেখেই দৌড়তেন গুজ্জর নগরের মাঠে। হাতে উঠত টেনিস বল। ১২ ওভারের প্রতিটি ম্যাচেই শুরুতে বল করতে পাঠানো হত এই তরুণ পেসারকে।
advertisement
প্রথম দু’ওভারের মধ্যে ওপেনারদের ফিরিয়ে দিতে পারলেই একশো টাকা! শেষের দিকে উইকেট পেলে সে রকম মূল্য দেওয়া হত না। পাড়ার খেলায় নজর কাড়ার পরেই তাঁর সামনে খুলে যায় অর্থের বিনিময়ে ম্যাচ খেলার রাস্তা। উমরান মালিক হয়তো তখনও ভাবেননি এগোতে এগোতে এক দিন তাঁর সামনে খুলে যাবে আইপিএলের দরজা।
সেখান থেকেই সুযোগ পেয়ে যাবেন ভারতীয় ‘এ’ দলে। ছোটবেলা থেকে বড় পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন না দেখা ছেলেটাই এখন আগামী পেস প্রজন্মের ব্যাটন হাতে দৌড়চ্ছেন। অনূর্ধ্ব-২৩ ম্যাচ চলাকালীন মাঠে এসেছিলেন ইরফান পাঠান। প্রাক্তন বাঁ-হাতি পেসারই তখন ‘মেন্টর’ হন সামাদদের। উমরানকে বল করতে দেখে সামাদ ও পরভেজ রসুলের কাছে ইরফান জানতে চেয়েছিলেন, ছেলেটি কে?
ওরাই তখন উমরানের পরিচয় দেন। সেদিন থেকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। পরে উমরান মালিককে নিয়ে বেশ কিছু কোচিং সেশন করেন ইরফান। ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার জানিয়েছেন সাধারণত একজন ফাস্ট বোলার বল হাতে আগুন ঝড়াতে চায়। উমরান তেমনই মানসিকতার। ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়।
নিয়মিত দলের সঙ্গে থেকে বিরাট, রোহিত, রাহুল দ্রাবিড়দের পরামর্শ পেয়ে নিজেকে আরও মসৃণ করে তুলবে। ওর পেশি শক্তি আর একটু বেড়ে গেলে ১৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বল করতে পারে। তখন নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে পারলে উমরান ভারতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলার হয়ে উঠবে।
শুধু ইরফান নন, সুনীল গাভাসকার এবং রবি শাস্ত্রী পর্যন্ত বড় সার্টিফিকেট দিচ্ছেন কাশ্মীরের উমরানকে। ভারতীয় বোর্ডের এই ছেলেকে বিশেষ যত্ন নিয়ে তৈরি করা উচিত বলে দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী।