সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকজন কোচের দুর্দশার খবর উঠে এসেছে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে। লখনউয়ের অভিজ্ঞ ফেন্সার সঞ্জীব কুমার গুপ্তা। তিনি এখন বাধ্য হয়ে কাঠের মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন। রোজা আয় ৩০০ টাকার মতো। কোনওভাবে সংসার খরচ চালাচ্ছেন। পাঁচবার জাতীয় স্তরে পদক জিতেছেন তিনি। ফেন্সিংয়ে ডিপ্লোমা রয়েছে তাঁর। ভারতীয় সেনার একাডেমিতে বহু বছর ধরে কোচিং করাচ্ছেন তিনি। কিন্তু লকডাউনে খেলা বন্ধ। অনুশীলন হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য অন্য পেশা বেছে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না তাঁর কাছে। খেলা থেকে দূরে থাকতে মন চায় না। তবে সঞ্জীব কুমার গুপ্ত বলছেন, ''এর বাইরে কিছু করার ছিল না। কতদিন আর খালি হাতে বসে থাকা যায়! আমার ১২ বছরের মেয়ে ফেন্সিংয়ে জাতীয় স্তরে সোনা জিতেছে। পোল্যান্ডে টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ওকে পাঠাতে পারলাম না। রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এমনকী স্কুলের মাইনে দিতে পারিনি বলে ক্লাস ফাইভ-এর রেজাল্ট হাতে পায়নি ও। এখন তো স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।''
advertisement
তীরন্দাজির কোচ প্রতাপ সিং য়ের অবস্থাও একই। দারিদ্র্যের জ্বালায় তিনি এখন সিঙ্গারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। গোটা জীবন তরুণ তীরন্দাজদের তৈরিতে মন দিয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তীরন্দাজরা দুর্দান্ত ফল করেছেন। এমন একজন কোচ এখন কিনা সিঙ্গারা বিক্রি করছেন! আক্ষেপের সুরে তিনি বললেন, এখন মনে হয় খেলাধুলাকে পেশা হিসাবে না বেছে নিলেই হত! কলকাতা এবং ভারতীয় সেনার একাডেমিতে তীরন্দাজির কোচ হিসেবে ১৮ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। জাতীয় স্তরে উত্তরপ্রদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন আট বছর। তারই কি না এখন অবস্থা! তাঁর দুই ছেলেমেয়ে টাকার অভাবে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বক্সার মহম্মদ নাসিম জাতীয় স্তরে বক্সিং চাম্পিয়ন। ছোটদের প্রশিক্ষণ দিতেন। লকডাউনের পর প্রশিক্ষণ বন্ধ। আয় নেই। তাই বাধ্য হয়ে এখন চা বিক্রি করছেন তিনি। ৩২ বছরের কেরিয়ার থমকে গিয়েছে করোনার জন্য।