চার রাউন্ড মিলিয়ে তাঁর মোট পয়েন্ট ৪২.৫৬৫ ৷ কিন্তু তাঁর এই রেকর্ড পয়েন্ট তাঁকে মূল পর্বের টিকিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি ছিল না৷ তিনি যোগ্যতা অর্জনপর্বে ১২ হওয়ায় মূল পর্বের টিকিট পেলেন না৷
এর আগে তাঁর লড়াইয়ের গল্প সকলেই জেনে গিয়েছিল৷ মুড়ি খেয়ে প্র্যাকটিসে নামতেন। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। সাফল্যের পিছনে ছিল তীব্র লড়াই। বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে প্রণতি নায়েক এবার টোকিও অলিম্পিকের ময়দানে। ভারতের একমাত্র জিমন্যাস্ট হিসেবে টোকিও অলিম্পিকে সুযোগ। গর্বিত বারাসাতের ‘সমন্বয়’। অপেক্ষায় ছিলেন কোচ রাখি দেবনাথ।
ছোট্ট মেয়েটা দিনভর লাফিয়ে বেড়াত। বড় হয়ে সেই মেয়েটাই এবার অলিম্পিকে। পিংলার প্রণতি নায়েক। জিমনাস্টিক্সে ভারতের হয়ে সোনা জেতার স্বপ্ন বঙ্গ তনয়ার।
শুরুটা অবশ্য মসৃণ ছিল না। বাস চালকের বাবার অভাবের সংসার। সব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন প্রণতি। করোনা আবহে অনুশীলনের জায়গাও পাচ্ছিলেন না। বন্ধ সাই। চারদিকের কড় বিধি-নিষেধে ঘরের বাইরে বেরনোর উপায় নেই। অথচ অতিমারির সময়ে জিমন্যাস্টদের শরীর ঠিক রাখা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। জিমন্যাস্টিকের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন। সেই সময়ে পাশে এসে দাঁড়ান রাখি দেবনাথ। জাতীয় জিমন্যাস্ট, এখন রেলের কোচ।
বারাসাত শহরে সমন্বয়-এর মাঠে তাঁর কোচিং সেন্টার। প্রণতিকে নিজের কাছে রেখে, অনুশীলনের সুযোগ করে দেন রাখি।
প্রণতির সঙ্গেই অনুশীলন করতেন প্রীতি, সুমনরা। প্রণতির কাছ থেকেই কঠিন পরিশ্রমের মন্ত্র শেখা। সমন্নয় কর্তারাও চাইছেন, আরও অনেক প্রণতি তৈরি হোক তাঁদের ঘরের মাঠে। গতবছর লকডাউনের সময় থেকে টোকিও যাওয়ার আগে পর্যন্ত রাখির তত্ত্বাবধানেই ছিলেন প্রণতি। বহু ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে স্বপ্নের কাছাকাছি বাংলার মেয়ে। কিন্তু একভাবে ইতিহাস হলেও অর্থাৎ প্রথম বাঙালি মেয়ে জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা পেলেও মূল পর্বের যোগ্যতা অর্জনের স্বপ্ন এবার অধরাই থেকে গেল৷