ষষ্ঠী, অষ্টমীতেও ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন। জীবন যে এত অনিশ্চিত, তা অনির্বাণ নিজেও হয়তো ভাবেননি। দ্বাদশীতে সব শেষ। বিসর্জনের বাজনার রেশ কাটতে না কাটতেই অনির্বাণ চলে গেলেন। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর জন্য চোখ ভিজেছে ময়দানপ্রেমীদের। যে যার মতো পেরেছেন, অনির্বাণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে শেষ রক্ষা হল না।
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তানে ম্য়াচে সান স্ট্রোকে আক্রান্ত রিচা ঘোষ, চিকিৎসা চলছে বাংলার মেয়ের
advertisement
দুটো বিকল কিডনির জন্য গত কয়েক মাসে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। একদিকে টাকা জোগারের চিন্তা, আরেকদিকে ডায়ালিসিসের কষ্ট। ডোনার পাওয়া যাচ্ছিল না। আর্থিক সাহায্যের জন্য বারবার আকুতি জানান অনির্বাণ। এত টাকা জোগানো তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মা-বাবা দুজনেই প্রয়াত। ২২ সেপ্টেম্বর তবু দিদি, বন্ধুরা অনির্বাণের জন্মদিন জমজমাট করে তুলেছিলেন। সব সময় হাসিমুখে থাকা অনির্বাণ একটা দিনের জন্য হলেও ভুলে ছিলেন একাকিত্ব। একা থাকার যন্ত্রণা, তার উপর এই প্রবল অসুখ, অনির্বাণ বারবার বলতেন, মা থাকলে ভাল হত।
ময়দানে অজাতশত্রুর হিসেবেই সবাই চিনতেন অনির্বাণকে। দিলখোলা, হাসিমুখে থাকা একজন মানুষ। ‘দাদাগিরির’ মঞ্চে নিজের অসুস্থতার কথা তুলে ধরেছিলেন অনির্বাণ। বলেছিলেন, তাঁর দুটি কিডনিই বিকল। প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই। সবাই মিলে সাহায্য না করলে বাঁচতে পারবেন না। মা-বাবা নেই। আত্মীয়রা অনির্বাণের এই পরিস্থিততে সর্বোতভাবে পাশে দাঁড়াতে পারেননি। নিঃসঙ্গ অনির্বাণ একাই লড়ছিলেন।
আরও পড়ুন- বিশ্বজয় করতে 'যুদ্ধক্ষেত্রে' ভারত, ছবি দিয়ে জানান দিলেন খোদ 'সেনাপতি'
দরকার ছিল প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকা। অনির্বাণের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও। তবে অনির্বাণ শেষ পর্যন্ত এই লড়াই জিততে পারলেন না। অসুস্থ, অশক্ত শরীর নিয়েও পুজোর কটা দিন ভাল থাকার চেষ্টা করেছিলেন। পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবার ফেরেন। শেষ পর্যন্ত এন্টালির বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন মোহনবাগানের অন্ধ ভক্ত।