তবে রঞ্চিতার জীবনে ক্রিকেট খেলা হঠাৎ করেই শুরু হয়নি। তার বাবা বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত হলেও খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই। টেনিস খেলতে ভালবাসতেন তিনি। বাবাকে দেখে প্রথমে রঞ্চিতা টেনিস খেলা শুরু করে। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার মন টেনে নেয় ক্রিকেট। ব্যাট হাতে দাঁড়ান, বল হাতে দৌড়ান—এ যেন তার ভেতরে লুকিয়ে থাকা স্বপ্ন ও শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। বাড়ির সামনে পুকুরপাড়ে, ধানক্ষেতের পাশে ছোট্ট জায়গায় শুরু হয় তার প্রথম নেট প্র্যাকটিস। বাবা মাটি সমান করে মেয়ের জন্য তৈরি করেন একটি ছোট পিচ। সেই পিচেই শুরু হয় রঞ্চিতার প্রকৃত ক্রিকেটযাত্রা।
advertisement
প্রতিদিন সকাল হলে শুরু হয় তার নিয়মিত অনুশীলন। ঘুম থেকে উঠেই ব্যাট হাতে নেমে পড়ে প্র্যাকটিসে। কয়েক ঘণ্টার ব্যাটিং-বোলিংয়ের পর যায় স্কুলে। স্কুল থেকে ফিরে আবার সেই পুকুরপাড়ের নেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাটুনি। রোদের তাপ, মাঠের কাদা, ধানক্ষেতের বাতাস—কিছুই তাকে থামাতে পারে না। সন্ধ্যা নামলে শুরু হয় পড়াশোনা। খেলাধুলার প্রতি মনোযোগের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও সে মেধাবী। গ্রামের মেঠোপথ, দারিদ্র্য—এসব সত্ত্বেও তার চোখে স্বপ্ন রিচা ঘোষের মতো ক্রিকেটার হওয়া।
রিচা ঘোষের বিশ্বকাপ জয় যেন রঞ্চিতার স্বপ্নকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। বামনবাড় গ্রামের মানুষের এখন একটাই বক্তব্য—“আমাদের ছোট্ট রিচাও একদিন বিশ্ব জয় করবে।” রঞ্চিতার প্রতিভা, তার নিষ্ঠা আর ছোটবেলার এই সংগ্রাম দেখে আশাবাদী তার স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে পরিবার। সবার মনে এখন একটাই আশা—শিলিগুড়ির রিচার মতোই একদিন পটাশপুরের এই ছোট্ট মেয়েটিও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।
Madan Maity





