২২ নভেম্বর, ২০২২। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এই লুসেইল স্টেডিয়ামেই হার দিয়ে অভিযান শুরু করেছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। যে হারের পর আর্জেন্টিনার ভবিষ্য়ৎ এবং সর্বোপরি মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখার স্বপ্নে ইতি টেনেছিলেন অনেক ভক্তই।
advertisement
কিন্তু ওই একটা ম্য়াচই যেন চাগিয়ে দিয়েছিল ফুটবলের রাজপুত্রকে। তাই রবিবার সেই লুসেইল স্টেডিয়ামেই বিশ্বকাপ হাতে জীবনের সেরা মুহূর্ত উপভোগ করলেন লিওনেল মেসি। চ্য়াম্পিয়ন করলেন আর্জেন্টিনাকে। পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলার পর অবশেষে তাঁর স্বপ্নপূরণ হল।
সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রথম ম্য়াচে হারের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, ফুটবল দেবতা হয়তো এক জীবনে মেসিকে সবকিছু দেবেন না। যেভাবে বিশ্বকাপ অধরাই থেকে গিয়েছে এই প্রজন্মের আর মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
কিন্তু ফুটবল দেবতা বোধহয় ফুটবলের রাজপুত্রের জন্য় চিত্রনাট্য়টা একটু অন্য় ভাবে লিখেছিলেন। তাই প্রথম ম্য়াচে সৌদির বিরুদ্ধে অপ্রত্য়াশিত হারের পর থেকেই অন্য় মেসিকে দেখল ফুটবল বিশ্ব। যত বিশ্বকাপ এগিয়েছে, ততই যেন শান্ত দেখিয়েছে তাঁকে। পেনাল্টি, টাই ব্রেকার মারার সময়ও তাঁর হিমশীতল মানসিকতা অবাক করেছে বিশেষজ্ঞদের। গোটা বিশ্বের চোখ তাঁর দিকে, আর মেসির চোখ যেন ছিল বিশ্বকাপে। তিনি যেন জানতেনই, অধরা কাপকে হাতে নিয়েই তিনি বুয়েনস আইরেসের বিমান ধরবেন। রবিবারও ফাইনালে টাইব্রেকারে যখন শান্ত ভাবে ফ্রান্সের গোলকিপার লরিসকে উল্টোদিকে ফেলে জালে বল জড়িয়ে দিলেন, অবাক হয়ে ধারাভাষ্য়কার বলছেন, 'এই পরিস্থিতিতে এমন শট নেওয়া যায়?'
২০০৬ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে নামার পর ৬ হাজারেরও বেশি দিনের অপেক্ষা। লুসেইলেই হার দিয়ে শুরু করে লুসেইলেই বিশ্বজয়। এত সব নজিরের মাঝেও অন্য় নজির তৈরি করল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের প্রথম ম্য়াচ হারার পর শেষ পর্যন্ত কাপ জিতলেন লিও মেসিরা। এর আগে ২০১০ সালের বিশ্বকাপে প্রথম ম্য়াচেই সুইৎজারল্য়ান্ডের কাছে হেরে গিয়েও বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। ১২ বছর পর সেই একই ঘটনা ঘটালো মেসির আর্জেন্টিনা। ইতিহাস তৈরি হল লুসেইলে!