চিরকাল স্পষ্ট বক্তা। জার্মানির বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম বিল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাথিউস বলেন ইংলিশ সমর্থকরা গোটা ইউরো কাপ জুড়ে একাধিক খারাপ উদাহরণ তৈরি করেছেন। জার্মানির বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের জয়ের পর গ্যালারিতে একটি বাচ্চা মেয়েকে কাঁদতে দেখা যায়। তার বাবা সেই শিশুকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর ইংলিশ সর্মথকরা নিম্নমানের মন্তব্য করেন। কেউ বলেন ' খুদে নাৎসি ', কেউ লেখেন ' জার্মান বোমা '। কেউ বলেন বাচ্চাটিকে দেখে একদম মায়া হচ্ছে না।
advertisement
এখানেই শেষ নয়। ক্রোয়েশিয়া, চেক রিপাবলিক, জার্মানি এবং ইতালির জাতীয় সংগীত চলার সময় ইংলিশ সর্মথকরা কুকুরের আওয়াজ করেন। বিপক্ষ দেশের জাতীয় সঙ্গীতের এমন অবমাননা ক্ষমার অযোগ্য। তাছাড়া ডেনমার্ক গোলরক্ষক ক্যাসপার স্কিমিচেলের চোখে লেজার রশ্মি ফেলা হয়। ফাইনাল হারের পর বেছে-বেছে ইতালি সমর্থকদের মেট্রো স্টেশনে ফেলে মারা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ইতালির পতাকা। থুতু ছেটানো হয় পতাকার গায়ে।
লোথার মনে করেন এই সবকিছুর দাম দিতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। যদিও ইংলিশ ফুটবলারদের লড়াইকে কুর্নিশ করেছেন প্রাক্তন জার্মান অধিনায়ক, তাঁদের জন্য খারাপও লাগছে তার, কিন্তু ইংলিশ সমর্থকদের কুৎসিত আচরণ এবং বিপক্ষ দলের প্রতি অমানবিক ব্যবহার আখেরে ইংল্যান্ডের ক্ষতি করেছে স্পষ্ট জানিয়েছেন ম্যাথিউস। জার্মানির বিরুদ্ধে যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছিল ইংল্যান্ড মেনে নিয়েছেন তিনি।
তবে সমর্থকদের এমন ব্যবহার শুধুমাত্র বিপক্ষ দলের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল না। নিজেদের দলের তিন কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারকেও টার্গেট করেছিলেন ইংলিশ সর্মথকরা। লোথার মনে করেন এর থেকে খারাপ আর কী হতে পারে ? যে ফুটবলার নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ইংল্যান্ডের জার্সি ঘামে ভিজিয়ে ফেলছে, তাঁকেই যদি বর্ণ বিদ্রুপ সহ্য করতে হয় তাহলে সেই ফুটবলারের মনে আঘাত লাগতে বাধ্য।
ফুটবলে সেই দলকেই ভাগ্য সঙ্গ দেয় যাঁরা পরিশ্রম করে এবং বিপক্ষ দলকে মর্যাদা দেয়। ইংল্যান্ড ফুটবলাররা পরিশ্রম করেছেন, বিপক্ষ দলকে মর্যাদা দিয়েছেন। ইংলিশ কোচ থেকে শুরু করে অধিনায়ক এমনকি প্রধানমন্ত্রী সমর্থকদের এমন ব্যবহারের জন্য কড়া ভাষায় নিন্দা করেছেন। কিন্তু পাপ না ছাড়ে বাপকে। ইংলিশ সমর্থকরা যে করেছেন, সেই কালি মোছার নয়। ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে পরাজয় সেটাই প্রমাণ করে।