সুইৎজারল্যান্ডকে হাফ ডজন গোলের মালা পড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে নামা পর্তুগিজদের টেনে বাস্তবে মাটিতে নিয়ে আসলেন হাকিমিরা। ৯০ মিনিটের ম্যাচে ৬০০র বেশি পাস খেলে ৭৪ শতাংশ বল পজিশন রেখেও কাজের কাজটাই করতে পারল না পর্তুগাল। এক সময় জার্মানি-ইতালির মত দলগুলির যেরকম সঙ্ঘবদ্ধ ডিফেন্স দেখা যেত, কাতারে মরক্কো ঠিক যেন তারই প্রতিবিম্ব। মরক্কোর ডিফেন্স থেকে বল গলা তো দূরের কথা, মাছিও গলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। তবুও বার তিনেক গোলের মধ্যে বল রেখেছিলেন পর্তুগালের স্ট্রাইকাররা। তবে সেখানেও যে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইয়াসিন বুনোউ। মরক্কো টিমের শেষ প্রহরীর হাত টপকে একটা বল জাল পর্যন্ত যেতে পারল না।
advertisement
আরও পড়ুন - ফাইনালের আগেই হয়ে গেল ফাইনাল, পেনাল্টি মিস করে ব্রিটিশদের খলনায়ক অধিনায়ক হ্যারি কেন
ম্যাচের শেষ দিকে রোনাল্ডোর একটা জোরালো গ্রাউন্ডার শট যেভাবে শুয়ে পড়ে বাঁচালেন ৬ ফুট পাঁচ ইঞ্জির বুনোউ। সেটা নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা চলতে পারে। আসলে মরক্কোর দলের মূল মন্ত্র একটাই। হারার আগে হারব না। সবুজ মাঠে বিপক্ষকে এক মুহূর্তের জন্য জমি ছাড়বো না। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভেঙেই পাল্টা হানা চালাবো। সুযোগ কম আসবে তবে যেটাই আসবে সেটা থেকে নিশ্চিত গোল করব। ঠিক এই মন্ত্রেই পর্তুগাল বধ করল মরক্কো। ৪২ মিনিটে এন নেসিরি কয়েক ফুট লাফিয়ে যেভাবে হেডে গোল করলেন তাতে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল রোনাল্ডোর-ও।
যদিও মরক্কোর এ দিনের জয়ের জন্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন পর্তুগাল কোচ স্যান্টোস। সুইস ম্যাচের মত মরক্কোর বিরুদ্ধেও রোনাল্ডোকে রিজার্ভ বেঞ্চে শুরুতে রেখে দিলেন তিনি। ভরসা রাখলেন অভিষেকে হ্যাটট্রিক করা রামোসের ওপর। আসলে দলের সুপারস্টারের সঙ্গে ইগোর লড়াই জিততে গিয়ে আখেরে দলের ক্ষতি করলেন বর্ষীয়ান এই কোচ। খেলার শুরুতে বিপক্ষে রোনাল্ডোকে না দেখতে পেয়ে বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেল মরক্কো। সিআর সেভেনের জন্য বিশেষ প্ল্যানের আর দরকার পড়ল না। যদিও এক গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর একান্ন মিনিটে রোনাল্ডোকে নামালেন স্যান্টোস। কিন্তু ততক্ষণে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় পৌঁছে গেছে টিম মরক্কো। প্রায় ৪০ মিনিট রোনাল্ডো মাঠে থাকলেও একবার ছাড়া তার উপস্থিতি চোখে পরল না খুব একটা। আসলে শুরু থেকে রোনাল্ডোকে না নামিয়ে তাঁর আত্মবিশ্বাসটাই যেন নষ্ট করে দিয়েছিলেন স্যান্টোস। অতিরিক্ত সময়ের শেষ পাঁচ মিনি দশ জনের মরক্কো দলের বিরুদ্ধেও গোল করতে ব্যর্থ হল পর্তুগাল।
খেলা শেষ হতেই কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন রোনাল্ডো। শেষ বিশ্বকাপের শূন্য হাতে ফিরলেন সিআর সেভেন। ট্রাজিক হিরো হয়েই থেকে গেলেন ৩৭ এর সিআর সেভেন।