ঘটনার সূত্রপাত মাসখানেক আগে। সিএবি কোষাধ্যক্ষের ক্লাব শতাব্দী প্রাচীন উয়াড়ির তরফে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ তুলে দক্ষিণ কলকাতার লেক থানা ও আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন ক্লাবের ছয় প্রতিনিধি। পরবর্তী সময়ে তাঁরাই ঘটনার কথা জানান সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাদের তরফে কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাঁচ পাতার অভিযোগ জমা পড়ে সিএবিতে। যেখানে আর্থিক বিনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দুই জায়গায় পদে বসে থাকার অভিযোগ তোলা হয়।
advertisement
চিঠিতে স্পষ্টভাবে অভিযোগ করা হয়, সিএবি থেকে উয়াড়ি ক্লাব প্রতিবছর যে অনুদান পায়, সেই অর্থ কোষাধ্যক্ষ প্রবীর চক্রবর্তী ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। অর্থাৎ ক্লাবের ক্রিকেটের অনুদানের জন্য যে টাকা দেওয়া হয় সেই টাকা প্রবীর চক্রবর্তী নিজেই সই করে সিএবি থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়েছেন, কিন্তু তা ক্লাব অ্যাকাউন্টে জমা করেননি। যদিও পাল্টা যুক্তিও রয়েছে। সিএবি কোষাধ্যক্ষ তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, অতীতে উয়াড়ি ক্লাব পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কিছু অর্থ খরচ করেছিলেন তিনি। সেই টাকাই সিএবি থেকে ক্লাবের নামে তুলেছেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে কি এমনটা করা যায়? তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আর্থিক বিনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি সিএবি কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি, একাধিক পদে বসে থাকার অভিযোগও করা হয় সেই চিঠিতে। সিএবি কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে প্রবীরবাবু কীভাবে উয়াড়ির সচিব পদেও কী করে থাকেন, তা নিয়েও অভিযোগ করা হয়। এক ব্যক্তি একাধিক পদে একসঙ্গে থাকার ঘটনাটি লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে তৈরি হওয়া সংশোধিত সিএবি-র গঠনতন্ত্রের ৬৭ (৪) ধারার বিরোধী।
ইতিমধ্যেই এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সিএবির ওম্বাডসম্যান পর্যন্ত গড়িয়েছে। আগামী ১৯ জুলাই বিষয়টির শুনানি করতে চলেছেন তিনি। যেখানে সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে। তার আগে আগামী শনিবার দুপুরে সিএবিতে এথিক্স অফিসারের কাছে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিএবির কোষাধ্যক্ষকে।
অতীতে বাংলা ক্রিকেটে একাধিক বিতর্কে ময়দান উত্তাল হয়েছে। অতিরিক্ত গাড়ির বিল, খাবারের অতিরিক্ত খরচ থেকে সিএবির চেয়ারকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ, এমনকী ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন সিএবির কর্তা। তবে খোদ কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ অতীতে কখনও এসেছে কিনা, তা কারোর জানা নেই। এমন ঘটনা সামনে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে বাংলা ক্রিকেটের অন্দরমহলে। যদিও এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সবাই। বিষয়টি আইনে বিচারাধীন বলে কোনও মন্তব্যে নারাজ কর্তারা।