পুলিশ জানিয়েছে, জরুরি পরিষেবা কর্মীরা ওই গাড়ির চালক এবং একমাত্র যাত্রী সাইমন্ডসকে বাঁচানোর সমস্ত চেষ্টাই করেন। কিন্তু গাড়িটি দুর্ঘটনার পরে ওলট পালট হয়ে ছিটকে পড়ায় গুরুতর আঘাত পান সাইমন্ডস। ব্যাপক পরিমাণে আঘাতের কারণেই প্রাণ হারান অস্ট্রেলিয় ক্রিকেট তারকা। যদিও কর্তৃপক্ষ অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের নাম প্রকাশ করেনি। তবে একাধিক সংবাদ সংস্থা এবং প্রাক্তন খেলোয়াড়রা খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
advertisement
আরও পড়ুন- কে মানিক সাহা? ভোটের মুখে বিপ্লব দেবকে সরিয়ে যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করল বিজেপি?
অস্ট্রেলিয়ার সাইমন্ডসের প্রাক্তন সতীর্থ জেসন গিলেস্পি ট্যুইট করেছেন, “নাড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়ঙ্কর খবর! আমি পুরোপুরি বিধ্বস্ত। আমরা সবাই তোমাকে মিস করব বন্ধু।”
অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের আরেকজন প্রাক্তন সতীর্থ এবং সহকর্মী ধারাভাষ্যকার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট লিখেছেন, “প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।” পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারও জানিয়েছেন অ্যান্ড্রুর আকস্মিক মৃত্যুর খবরে তিনি “বিধ্বস্ত”। “মাঠে এবং মাঠের বাইরে আমাদের দুর্দান্ত সম্পর্ক ছিল। অ্যান্ড্রুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং প্রার্থনা জানাই,” ট্যুইট করেছেন শোয়েব।
সাইমন্ডসের সহকর্মী অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট কিংবদন্তী শেন ওয়ার্ন এবং রড মার্শ সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। তাঁদের মৃত্যুর কয়েক মাসের মধ্যেই অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের মারাত্মক এই দুর্ঘটনার খবরে ভেঙে পড়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
লার্জার-দ্যান-লাইফ সাইমন্ডস শুধুমাত্র খেলায় তাঁর বিধ্বংসী মনোভাবের জন্যই নয় সুপরিচিত ছিলেন না। অ্যান্ড্রুর সহজ সরল ব্যক্তিত্বের জন্যও অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের সবচেয়ে দক্ষ অলরাউন্ডারদের মধ্যে একজন ছিলেন অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। ২০০৩ এবং ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন সাইমন্ডস।
আরও পড়ুন- "ত্রিপুরাতে খেলা হবে," মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের পদত্যাগের পর ট্যুইট সায়নী ঘোষের
যদিও ২০০৮ সালের কুখ্যাত ‘মাঙ্কিগেট’ কেলেঙ্কারির জন্যও শিরোনামে ছিলেন অ্যান্ড্রু। ভারতের স্পিনার হরভজন সিংকে সিডনিতে ২০০৮ সালের নববর্ষের টেস্টে ‘বাঁদর’ বলে কটুক্তি করেছিলেন অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস।
তিনি কোনও অন্যায়ের কথা অস্বীকার করলেও তিন ম্যাচের জন্য হরভজন সিংয়ের খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু ভারত-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট সম্পর্কের ক্রমাবনতি ঘটতে থাকলে ভারত সফর ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকি দিলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ান এই খেলোয়াড় পরে জানান যে এই ঘটনাটি তাঁর জীবনের বড় বাঁক এবং এই ঘটনার পরেই প্রচুর মদ্যপান শুরু করেছিলেন অ্যান্ড্রু। সাইমন্ডসের ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চুক্তি প্রত্যাহার করা হয় ২০০৯ সালের জুন মাসে। মদ্যপান সংক্রান্ত নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠতে থাকায় ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে তাঁকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শত্রুতা সত্ত্বেও, সাইমন্ডস এবং হরভজন অবশ্য পরে একসঙ্গেই খেলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে।