শারীরিক এবং মানসিক নানা বাধা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও, সমাজের কাছে অনুপ্রেরণা তিনি। যারা তার সামনে পেছনে নানান কটুক্তি করে তাদের দেখিয়ে দিয়েছে সৎপথে নিজের উদ্যোগে কিছু করা যায়। পারিবারিক স্বচ্ছলতা না থাকার কারণে শারীরিক নানা কষ্টকে সহ্য করে হেঁটেই যেতে হত স্কুলে। এভাবেই করেছে স্নাতক হন, শেষ করেন বিএড। সম্প্রতি সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তের পড়াশোনা করছেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ আপনার চশমার কাচ কি পুরনো দেখাচ্ছে? জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন ১ ফোঁটা! মুহূর্তে হবে নতুনের মতো ঝকমকে
বাবা কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় সংসারের পুরো দায়িত্ব এখন তাঁর কাঁধে। তবুও হাসিমুখে এগিয়ে চলেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের এই মেয়ের জীবনের লড়াই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে গোটা সমাজকে। সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার নাম সঙ্গীতা মণ্ডল। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বাজাগেড়িয়া গ্রামে। বাড়ির পাশেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকার কাজ করেন সঙ্গীতা। তাতে যেটুকু রোজগার হয় তাতেই সংসারের খরচ ওঠে।
ছোট থেকে তার মাথায় চুল নেই। পায়েও রয়েছে সমস্যা। স্বাভাবিকভাবে দীর্ঘ পথ চলতে অসুবিধা হয় তার। মাথায় চুল না থাকায় বিভিন্ন সময়ে কটুক্তির শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। কিংবা কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে নিজেকে প্রকাশ করতে সঙ্কোচ হয়েছে। এভাবেই জীবনের বেশ কয়েকটা বছর অতিক্রান্ত হয়েছে তবুও জীবন যুদ্ধে হার মানেননি এই মেয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারে থেকেও আর্থিক অসচ্ছলতাকে সঙ্গী করে পড়াশোনা করে মানুষের মত মানুষ হতে চান।
বহুকাল আগে শারীরিক বিশেষ সক্ষম ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বর্তমানে সংসারে একা তিনি। মাথার উপরে রয়েছেন তার বাবা-মা। তবে সংসারের গোটা দায়িত্ব তার উপর। মানসিকভাবে কখনও ভেঙে পড়েননি। তার লক্ষ্য বাবা-মাকে দেখা। সংসারে আর পাঁচজনের মতো বেঁচে থাকা। এভাবে প্রতিদিনের সংগ্রাম এবং জীবন যুদ্ধের লড়াই সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত। কটুক্তিকে অবহেলা করে জীবনের জয়পথে এগিয়ে চলেছেন এই কন্যা। নারী দিবসে সবার মুখে তাই সঙ্গীতার নাম।
রঞ্জন চন্দ