ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা অনুছায়া ভদ্র নাতনির বিয়ের জন্য ২০১৪ সালে গোপীবল্লভপুর পোস্ট অফিসে ১০ হাজার টাকা ফিক্স ডিপোজিট করেন। বার্ধক্য জনিত কারণে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ঠাকুরমার। ফিক্স ডিপোজিটে নমিনি ছিলেন নাতনির মা রুমা ভদ্র। পোস্ট অফিসে ফিক্স ডিপোজিটের টাকা চাইতে গেলে ডেট সার্টিফিকেট ছাড়া পোস্ট অফিস টাকা দিতে অস্বীকার করে। ডেট সার্টিফিকেট ছিল রুমা ভদ্রের ভাসুর উত্তম ভদ্রের কাছে। তিনি কোনও ভাবেই রুমাকে অনুছায়া ভদ্রের ডেথসার্টিফিকেট দিতে চাইছিলেন না । এইভাবেই দীর্ঘ ছয় বছর ধরে টানাপোড়ন চলছিল টাকা নিয়ে।
advertisement
নাতনি এখন বড় হয়ে গোপীবল্লভপুর সুবর্ণরেখা মহাবিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ইতিমধ্যেই তাঁর বিয়ে পাকা হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছিল রুমার। গোপীবল্লভপুর দু’নম্বর ব্লকের প্যারালিকাল ভলেন্টিয়ার রিতা দাস দত্ত বিষয়টি জানার পর তার মাধ্যমে ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে লিখিত অভিযোগ জানায়। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি প্রিলিটিকেশনের মামলার রুজু করে কর্তৃপক্ষ। নোটিশ করে ডেকে পাঠানো হয় উত্তম ভদ্রকে। তারপরে ডেথ সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয় রুমা ভদ্রের হাতে। পোস্ট অফিসে টাকা চাইতে গেলে অনুছায়া ভদ্রের নামের বানানের অসংগতি থাকায় জটিলতা তৈরি হয়। সমস্ত জটিলতা ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করা হলে পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ রুমা ভদ্রের একাউন্টে ফিক্স ডিপোজিতে প্রায় ২৪ হাজার টাকা দিয়ে দেয়।
ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুক্তি সরকার বলেন, “আমাদের প্যারালিকাল ভলেন্টিয়ার সার্ভে করতে গিয়ে এই সমস্যাটি তাঁর নজরে আসে। তারপরেই আমরা সমস্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করি। অনুছায়া ভদ্রের ফিক্স ডিপোজিটের অর্থ তাঁর নমিনি রুমা ভদ্রকে দিয়ে দেয় পোস্ট অফিস। আমাদের ভাল লাগছে যে আমরা দীর্ঘ ছয় বছরের সমস্যাকে মাত্র ৬০ দিনে সমাধান করতে পেরেছি।” টাকা হাতে পাওয়ার পর মুখে হাসি রুমা ভদ্রের। ঠাকুরমার জমানো টাকাতেই এবার ধুমধাম করে বিয়ে হবে নাতনির।
বুদ্ধদেব বেরা