রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে বর্ধমানেও অনুষ্ঠিত হয়েছিল দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। উৎসবে জয়ীদের নাম নিয়ে শহর জুড়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল আগে থেকেই। বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেনের উপস্থিতিতে মহরম ও কার্নিভালের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হল। এদিন বিজয়ী তিনটি মহরম কমিটি এবং মায়ের কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী ৩০টি দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
advertisement
উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা, বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপার্সন কাকলি তা, জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক তথা এদিনের অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা খোকন দাস, পুরসভার অন্যান্য কাউন্সিলার-সহ বিশিষ্টরা।
আরও পড়ুন: সমুদ্রে সিত্রাং ফুঁসছে, দিঘার সৈকতে পুলিশি তৎপরতা
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রনীল সেন ও তাঁর সহযোগী তিন উদীয়মান শিল্পী চন্দ্রিকা, অরিত্র ও অরিজিতের সঙ্গে পুরনো দিনের বাংলা গান গেয়ে দর্শকদের মন জয় করেন। অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে শহরে মহরমের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী কমিটিগুলোর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারিকে পুরস্কৃত করা হয়। শহরের মেহেদীবাগান মহরম কমিটি এবছর প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তাদের হাতে ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে। দ্বিতীয় হয়েছে খাগড়াগড় মহরম কমিটি। তারা এক লক্ষ টাকার চেক পেয়েছে। তৃতীয় হয়েছে ভেরিখানা মহরম কমিটি। তাদের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: নজরে সুন্দরবন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন
এই অনুষ্ঠানের শেষে কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী দুর্গাপুজো কমিটিগুলোর হাতে একে একে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বর্ধমানে প্রথমবার কলকাতার আদলে কার্নিভালের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন।
এবার কার্নিভালের শোভাযাত্রায় প্রথম স্থান পেয়েছে যুগ্মভাবে সবুজ সংঘ ও কাঞ্চননগর দুর্গাপুজো সমন্বয় সমিতি। এরা প্রত্যেকেই পাঁচ লক্ষ টাকার পুরস্কারমূল্য জিতে নিয়েছে। যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ন্যাচারাল সিটি দুর্গাপুজো কমিটি ও ২নং শাঁখারীপুকুর সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। এরা প্রত্যেকেই পুরস্কারমূল্য আড়াই লক্ষ টাকা করে পেয়েছে। যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলমগঞ্জ বারোয়ারী ও রথতলা দুর্গাপুজো সমন্বয় সমিতি। এদের হাতে দেড় লক্ষ টাকা করে চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ স্থানে যুগ্মভাবে জায়গা করে নিয়েছে লাল্টু স্মৃতি সংঘ ও বহিলাপাড়া অদ্বিতীয়া মহিলা কল্যাণ সমিতি। দু'টি কমিটির হাতেই পুরস্কারমূল্য হিসেবে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। কার্নিভালে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে শহরের চারটি পুজো কমিটি। এদের প্রত্যেকের হাতে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। পুজো কমিটিগুলো হল বুড়ির বাগান সর্বজনীন, সদরঘাট কালিতলা বারোয়ারী দুর্গাপুজো কমিটি, খালুইবিল মাঠ গুডশেড রোড সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি ও ইছলা বাদ পদ্মশ্রী সংঘ। ষষ্ঠ স্থানেও চারটি পুজো কমিটি জায়গা করে নিয়েছে। তারা হল চৌরঙ্গী ক্লাব, মাতৃ সংঘ, আমরা সবাই মহিলা সমিতি ও কেশবগঞ্জ বারোয়ারী। প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে পুরস্কারমূল্য তুলে দেয় বিশিষ্ট অতিথিরা। এছাড়াও ১৪টি পুজো কমিটিকে ২০ হাজার টাকা করে পুরস্কৃত করা হয়েছে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, প্রথম বছরের কার্নিভাল বাসিন্দাদের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। এই পুরস্কার কার্নিভালে অংশগ্রহণকারী পুজো কমিটিগুলিকে আগামী বছর আরও ভালো করার প্রেরণা যোগাবে।
