গত বুধবার রাতে শক্তিগড় স্টেশনে ঢোকার মুখে মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয় ডাউন বর্ধমান ব্যান্ডেল লোকাল। তবে, দুটি ট্রেনেরই গতি কম থাকায় বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। লোকাল ট্রেনের মতো মালগাড়িটিও লাইনচ্যুত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বীরভূমের জনসংযোগ যাত্রার দ্বিতীয় দিনেও জনজোয়ার, একাধিক কর্মসূচি অভিষেকের
এ দিন রাত ৯টা নাগাদ বর্ধমান জংশন স্টেশন থেকে ছাড়ে ডাউন ব্যান্ডেল লোকাল। শক্তিগড় স্টেশনে যখন ট্রেনটি ঢুকছিল তখন পাশের লাইন দিয়েই একই দিকে যাচ্ছিল একটি তেল বোঝাই মালগাড়ি। আচমকাই মালগাড়ি এবং লোকাল ট্রেনের ইঞ্জিন কামরার মধ্যে পাশাপাশি সংঘর্ষ হয়। যার জেরে রেল লাইন থেকে নেমে যায় লোকাল ট্রেনের প্রথম বগিটি। তেল নিয়ে যাওয়া মালগাড়ির কয়েকটি ট্যাঙ্কারও লাইনচ্যুত হয় বলে খবর।
advertisement
বুধবার রাতের ঘটনায় যান্ত্রিক গোলযোগের সম্ভাবনার পাশাপাশি কোনও মানব-ত্রুটি রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল রেলের। অনেকেরই মত ছিল, এই ভুলের বড় মাসুল দিতে হতে পারত।
প্রাথমিক তদন্তে রেল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগের কারণে ওই দুর্ঘটনা ঘটেনি। বরং ঘটনার পিছনে রয়েছে সিগন্যাল অমান্য করার মতো কারণ।
রেল সূত্রের দাবি, ‘লোকো পাইলট’ সিগন্যাল মানেননি বলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে রেল। কারণ, যান্ত্রিক কোনও গোলযোগের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তবে রেল জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এলে বাকিটা বোঝা যাবে। বিষয়টিকে ‘সিগন্যাল পাস্ড অ্যাট ডেঞ্জার’-এর ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
রেলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, চালক কী করে সিগন্যাল ও ফাউলিং মার্ক একসঙ্গেই এড়িয়ে গেলেন। দুটি লাইন যেখানে একসঙ্গে এসে মিশেছে, তার আগেই নির্ধারিত দূরত্বে রয়েছে ফাউলিং মার্ক। সাদা স্ল্যাব দিয়ে একেবারে ফ্লুরোসেন্ট কালারে পেন্ট করা থাকে। যা দিন ও রাতে স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়। শান্টিং সিগন্যাল উপেক্ষা করলেও, এই ফাউলিং মার্ক উপেক্ষা করা চালকের অনুচিত৷
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রী রাম’! কেন বিজেপি ‘বহিরাগত’, ব্যাখ্যা কুণাল ঘোষের
‘সিগন্যাল পাসড অ্যাট ডেঞ্জার’ রেলের ভাষায় বিপদ সঙ্কেত অর্থাৎ, লাল সিগন্যাল না মেনে চালক যদি ট্রেন নিয়ে এগিয়ে যান, তখন তাকে বলা হয় ‘সিগন্যাল পাসড অ্যাট ডেঞ্জার’। সাম্প্রতিক সময়ে গত বছর শিয়ালদহ স্টেশনেও এই কারণেই দুই লোকাল ট্রেনের সংঘর্ষ হয়৷ ঘটনার জেরে এক শান্টিং লোকো পাইলটের চাকরি চলে যায়। শক্তিগড়ে রেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেও চালকের গাফিলতিতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে৷ চালক সিগন্যাল না মেনে ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যান বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।