বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম সাহসপুর দাসপাড়া। এই গ্রামের লতা, অনিমা, অসীমা-সহ মোট দশজন দশভূজাদের বসবাস। এদের দশভূজা বলার একটাই কারণ এই মহিলারা বাড়ির পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসার চালানোর জন্য একটি ঢাকির দল তৈরি করেছেন। এই মহিলা ঢাকি টিমের সদস্যরা সকালে ঘুম থেকে উঠে সংসারের যাবতীয় কাজ করেন এবং একটু বেলা হলেই সংসার খরচ চালানোর জন্য অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজও করেন তারা। সারাবছরটা তাদের এভাবে চললেও এই দুর্গা পুজোর অপেক্ষায় থাকেন তারা। কারণ এই পুজোতেই মহিলা ঢাকি টিমের বাই না হয় দূর দূরান্তে।
advertisement
পুজোতে একটানা বেশ কয়েকদিন ঢাক বাজিয়ে মহিলারা যে উপার্জন করেন সেই টাকা বাড়ির পুরুষের হাতে তুলে দেন সংসার চালানোর জন্য, তাই দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে সকাল সন্ধ্যা সাহস পুর দাসপাড়ায় কান পাতলে এখন শোনা যায় ঢাকের শব্দ। কারণ পূজোর আগে এই মহিলা ঢাকির টিম প্রায় প্রতিদিনই মহড়া দিয়ে চলেছে এখানে। এই মহিলাদের ঢাক বাজানোর পাশাপাশি রয়েছে ঢাকের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের খেলা। এই মহিলা টিমের ঢাক বাজানোর উপস্থাপনা দেখলে আপনারও মন ভাল হয়ে যাবে।
এই মহিলাদেরকে দেখা যায় কখনও ঢাকের উপর চড়ে মাথায় ঢাক নিয়ে ঢাক বাজাচ্ছে আবার কখনও মুখে কামড়ে ধরে ঢাকের তাল তুলছে এমন কি এক মহিলা এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি ঢাক নিয়েও বাজিয়ে চলেছে। তবে এই মহিলা ঢাকিদের সঙ্গবদ্ধ দল তৈরি করার পিছনে রয়েছে অদম্য জেদ এবং বেদনা দায়ক গল্প, মহিলাদের দাবি কিছু বছর আগে গ্রামের এক অনুষ্ঠানে বাইরে থেকে ঢাক বাজাতে এসেছিল কিছু মহিলা । সেই দেখে এই গ্রামের মহিলারা ভাবেন যে বাইরের মহিলারা ঢাক বাজিয়ে টাকা নিয়ে গেল তাহলে আমরা কেন ঢাক বাজাতে পারব না। এভাবেই শুরু হয়েছিল এখনকার মহিলাদের ঢাক বাজানো।