চাইল্ড হেল্পলাইন ও প্রোটেশন ইউনিটের কাউন্সিলর সেখ আজিজুল রহমান জানান, ‘আমাদের কাছে ফোন আসে দাসপুর ১ ব্লকে এক ব্যক্তি একটি পরিচয়বিহীন শিশুকে এনে লালনপালন করছে। পরবর্তীতে আমরা থানা ও ব্লকে খবর দিই এবং আমরাও সঙ্গে এসে যৌথভাবে উদ্ধার করি।’
advertisement
তিনি আরও জানান, ‘আমরা জানলাম, বাচ্চাটিকে ওরা নিয়ম মাফিক এনে রাখেননি, বেনিয়মে রেখেছেন। একটা বাচ্চাকে রাখতে গেলে যে সরকারি গাইডলাইন রয়েছে, সেই অনুযায়ী পোর্টাল অনলাইনের মাধ্যমে সরকারিভাবে আবেদনের ভিত্তিতেই কেউ বাচ্চাকে দত্তক নিতে পারে।’ উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে ঘাটাল মহকুমা হাসাপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর পুলিশ কাস্টডি থেকে চাইল্ড হেল্পলাইনের হাতে হস্তান্তরিত করা হয়। এরপর তাঁকে মেদিনীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চাইল্ডলাইনের তরফে জানানো হয়, সরকারি হোমে শিশুটিকে রাখা হবে।
জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ দিনের কন্যা সন্তানকে নিয়ে আনেন দাসপুরের বৈকুন্ঠপুরের পাইন দম্পতি। সুমিত পাইন ও তাঁর স্ত্রী মনিকা পাইনের দু’টি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাই পাইন দম্পতির ইচ্ছা ছিল কন্যা সন্তানের। পূর্ব মেদিনীপুরের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পূর্ব যোগাযোগ সূত্রে ১২ দিনের এই কন্যা শিশুটির সন্ধান পান তাঁরা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ওই বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানেই কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন অপর এক চাকুরিজীবি দম্পতি।তাঁদের তিনটি কন্যা সন্তান থাকায়, চতুর্থ কন্যা সন্তানকে নিজেদের কাছে রাখতে চাননি। তাই বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান দুই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। নিজেদের ইচ্ছায় শিশুটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন দাসপুরের পাইন দম্পতি। পাইন পরিবারে শিশুটি সযত্নে ছিল। মেয়ের নাম দেওয়া হয়েছিল আরোহী। এমনটাই জানান মনিকাদেবী।
এদিকে তাঁদের বাড়িতে শিশু থাকার খবর প্রশাসনের কানে পৌঁছতেই আইনের গেরোয় শিশুটিকে প্রশাসন ও চাইল্ড হেল্পলাইনের হাতে তুলে দিতে হয়। দুই পুত্র সন্তানের পর একটি কন্যা সন্তানকে পেয়েও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন পাইন দম্পতি।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ কুমার দাস জানান, ‘আমাদের কাছে এই নিয়ে ফোন আসে। আমরা আমাদের লোক পাঠিয়ে শিশুটিকে পদ্ধতি ও নিয়ম মেনে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। শিশুটিকে সরকারি হোমে রাখা হবে।’ কোথা থেকে কীভাবে শিশুটি দাসপুরের পাইন দম্পতির কাছে এল তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক।তিনি বলেন, ‘শিশুটি উদ্ধার করা আমাদের প্রথম কাজ। তারপর আমরা পরবর্তী তদন্ত শুরু করব, এখনই সব বলা সম্ভব না।’






