কেন প্রয়োজন হল গোল্ড হাব? দাসপুরের সঙ্গে সোনার কাজের সম্পর্ক অনেক পুরনো। একসময় গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ যেমন ধান চাষ বা মাটির কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন, দাসপুরের এক বিরাট অংশ সোনার কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে নিজেদের দক্ষতায় রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশেও নাম কুড়িয়েছেন। আজও বলা হয়—সবচেয়ে সূক্ষ্ম, নিখুঁত ও সুন্দর সোনার কাজ যদি কোথাও পাওয়া যায়, তবে তা দাসপুরের কারিগরদের হাতেই। এখানকার মানুষদের প্রতিভা এতটাই অনন্য যে দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় দাসপুরের কারিগররা সোনার গয়না বানানোর কাজে যুক্ত। ফলে বহু পরিবারকে বছরের পর বছর ঘর ছেড়ে বাইরে গিয়ে কাজ করতে হয়েছে। অনেককেই থাকতে হয়েছে অন্য শহরে বা দেশে, পরিবারের থেকে দূরে।
advertisement
আরও পড়ুন: দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন পেল নতুন ডিআরএম, জানুন পরিচয়
তাই স্বর্ণশিল্পীদের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে একটি সঠিক কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই উঠছিল। সেই দাবিরই প্রতিফলন হল এই গোল্ড হাব। চাইপাটে নতুন স্বর্ণশিল্প কেন্দ্র, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর দুই নম্বর ব্লকের চাইপাট এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে এই গোল্ড হাব গড়ার জন্য। সরকারি উদ্যোগে আধুনিক প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে বিশাল ভবন। এখানে থাকবে কারিগরদের জন্য কাজের জায়গা, প্রশিক্ষণের সুযোগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুবিধা এবং বিপণনের সঠিক পরিকাঠামো। ফলে যারা আগে অন্য রাজ্যে বা বিদেশে গিয়ে কাজ করতেন, তারাও নিজের গ্রামে বসেই কাজ করতে পারবেন। আবার নতুন প্রজন্ম যারা শিখতে চাইছে, তারাও এই গোল্ড হাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে। কবে শুরু হবে কাজ?
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বর্তমানে ভবনের সমস্ত কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা, বিদ্যুৎ সংযোগ, সিকিউরিটি ব্যবস্থা সবই সম্পূর্ণ। শুধু প্রশাসনের সবুজ সংকেত পেলেই কার্যত কাজ শুরু হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব শিগগিরই গোল্ড হাবে সোনার গয়না তৈরির কাজ শুরু হবে। গোল্ড হাব চালু হলে দাসপুরের অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। হাজার হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন। বহু পরিবারকে আর ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হবে না। ফলে পরিবার ভাঙনের সমস্যা যেমন কমবে, তেমনই গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতিতেও নতুন গতি আসবে।