স্নাতক পাশ করার পর তিনি অভিনয় বেশ পছন্দ করতেন। নাটকের পাশাপাশি যাত্রাদলেও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে লেখাঝোঁকার শখ ছোটবেলা থেকেই। সেইমতো স্নাতক পাস করার পর থেকেই তিনি যাত্রাপালা লেখা শুরু করেন। সেই লেখা নিয়ে বিভিন্ন যাত্রা দলে ছোটা। বেশ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি প্রায় ১৭টি যাত্রাপালা লিখেছেন। মূলত সামাজিক এই যাত্রাপালা পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এমনকি ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় পরিবেশন হয়েছে। সেই সময় কোনও প্রিন্টার বা জেরক্স মেশিন না থাকায় হাতে লিখতেন এই সমস্ত সংলাপ। এখনও বেশ কিছু সংলাপ তিনি গুছিয়ে রেখেছেন। সেই পান্ডুলিপি আর কয়েক বছর পর হয়তো এক ইতিহাস পরিণত হবে।
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার গণপাদা এলাকার বাসিন্দা সুকুমার শাসমল মনোহরপুর রাজা রামচন্দ্র বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক। ১৯৮৭ সাল থেকে যাত্রার সংলাপ লেখা শুরু। নেপথ্যে অবশ্য একটি ঘটনা রয়েছে। যাত্রাদলে এমন কিছু চরিত্র থাকত যারা বেশ উপেক্ষিত থেকে যায়। একবার একটি ছোট্ট দৃশ্যে অভিনয়ের পর বেশিরভাগ সময় তাঁদের আর স্টেজে দেখা যেত না। সেই উপেক্ষিত চরিত্র বাদ দিয়ে প্রধান চরিত্রে যাতে সবাই অভিনয় করতে পারেন সেই ভাবনা নিয়েই যাত্রার সংলাপ লেখা। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক ঘটনার উপর তিনি যাত্রাপালা লিখেছেন, যা সেই সময় হিট।
প্রথমে অ্যামেচার যাত্রা দিয়েই তাঁর পথচলা শুরু। পরবর্তীতে প্রায় তিন বছর পেশাদার যাত্রা দলে অভিনয় করেছেন। পরবর্তীতে চাকরি পাওয়ার পর যাত্রাদল ও সংলাপ লেখা ছাড়তে হয় তাঁকে। প্রথম জীবনে পূর্ব মেদিনীপুরে চাকরি পান সুকুমারবাবু। পরে অবশ্য বদলি নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার মনোহরপুরে আসেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অন্যদিকে ধীরে ধীরে যাত্রার কদর কমতে থাকে। এখন আর যাত্রার সংলাপ লেখা হয় না। তবুও প্রায় ৩০ বছর আগের হাতে লেখা সেই যাত্রার সংলাপের পান্ডুলিপি গুছিয়ে রেখেছেন এই প্রধান শিক্ষক। এখনও তাঁর গলায় সেই জোর। যেকোনও চরিত্রের দু-চার কলি যেন এক আলাদা পরিবেশ সৃষ্টি করে। স্বাভাবিকভাবে প্রধান শিক্ষকের এই ভাবনা এবং যাত্রাশিল্পে এতদিন কাটানো, সংস্কৃতি জগতের এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে তিনি একাধিক প্রবন্ধ, ছোটগল্প এবং কবিতা লিখছেন। প্রধান শিক্ষকের এই গুণ অবাক করেছে সকলকে।





