প্রতিদিন লোহাকে আগুনে গলিয়ে, হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করেন নানা জিনিস। শুধু এলাকার মানুষই যে কেনেন তা নয়, প্রত্যন্ত গ্রামের তৈরি এই জিনিস যায় ভিন রাজ্যেও। বংশপরম্পরায় পারিবারিকভাবে এই পেশাকে টিকিয়ে রেখেছে কয়েকটি পরিবার। এলাকার পরিচিতি এনে দিয়েছে লোহার তৈরি এই জিনিস। পশ্চিম মেদিনীপুরের বাংলা-ওড়িশা সীমানার এক প্রান্তে প্রাচীন জনপদ দাঁতন। এই দাঁতনের অর্থনৈতিক ভীত নির্ভর করে সীমানা বাংলার কৃষি ও ছোট শিল্পের উপর। বহু প্রাচীন কাল থেকে বেশ কয়েকটি পরিবার লোহার কাস্তে, হাতুড়ি, দা, কাটারি সহ নানা জিনিস তৈরি করেন। যদি এই পেশায় কিছুটা নতুনত্ব এলেও পূর্বপুরুষদের সেই পেশাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তারা।
advertisement
আরও পড়ুন: এই গেল গেল পরিস্থিতি…! সুবর্ণরেখায় তুমুল জল বাড়তেই ব্যাক টু ব্যাক আতঙ্ক মেদিনীপুরের এইসব এলাকায়
তৎকালীন ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড ধরে গেলেই দাঁতনের স্কুল বাজার এলাকায় দেখা মিলবে বেশ কয়েকটি কামারশালার। যে দোকানের সামনে সাজান রয়েছে ছুরি, বটি, কুঠুরি, কোদাল সহ লোহার তৈরি একাধিক সরঞ্জাম। রাস্তা থেকেই শান দেওয়া এই সমস্ত চকচকে লোহার সামগ্রী লক্ষ্য করবেন আপনি। তবে রাস্তার ধারে হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে মিলছে এই লোহার জিনিস। তবে এর নেপথ্যে রয়েছে শত বছরের ইতিহাস। ইতিহাস গবেষকেরা মনে করেন, দাঁতনের লোহার শিল্প বেশ অনেক বছরের পুরানো। শুধু জেলা নয় জেলা ছাড়িয়েও দেশের একাধিক জায়গায় গিয়েছে দাঁতনে দাঁতনে তৈরি যাঁতি। প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই জনপদের মানুষজন মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। ধান, সবজি চাষের পাশাপাশি ব্লকের বেশ কিছু অংশ এবং মোহনপুর এলাকার অধিকাংশ পরিবার পান চাষের উপর নির্ভরশীল।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বর্তমান দিনে প্রযুক্তিতে বদল এনেছেন তারা। তবে পারিবারিক পেশাকে টিকিয়ে রেখেছে কামার পরিবার। এখনও তাদের তৈরি লোহার নানা জিনিস যেমন নিজেদের এলাকায় বিক্রি হচ্ছে তেমনই তাদের হাতে তৈরি নানা জিনিস যাচ্ছে বাইরেও। প্রাচীন এই জনপদের প্রচার ঘটিয়েছে কামারদের হাতে তৈরি লোহার এই দৈনন্দিন ব্যবহার্য নানান জিনিস। স্বাভাবিকভাবে বংশপরম্পরায় টিকিয়ে রাখা কামারদের এই কুটির শিল্প সুখ্যাতি এনে দিয়েছে জেলার। জেলা ছাড়িয়েও ভিন রাজ্যে পরিচিতি বাড়িয়েছে দাঁতনের লোহার তৈরি জিনিস।
রঞ্জন চন্দ