বছরের পর বছর ধরে এমনই বেহাল পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরেই নির্ভরশীল প্রায় ৪০থেকে ৫০টি গ্রামের মানুষ, এক কথায় গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছাড়া বড় কোনও সমস্যা হলে এলাকার মানুষজনকে বহু দূরে যেতে হয় ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতাল, ও ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল।
advertisement
হাসপাতাল সূত্রে খবর হাসপাতালে রয়েছে দু'জন চিকিৎসক, দু'জন নার্স একজন ফার্মাসিস্ট তা ছাড়াও রয়েছেন গ্রুপ ডির কর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্যরা। বর্তমানে হাসপাতালের বেহাল, পরিস্থিতি। পলেস্তার খসে বেরিয়েছে লোহার রড, দেওয়ালে ধরেছে বড় বড় ফাটল। বৃষ্টি হলে ছাদ ভেদ করে জল ডুবে প্রতিটি ঘর, যখন তখন ছাদ ভেঙে পলেস্তার খসে পড়ছে।
এই হাসপাতালেই প্রতিনিয়ত চিকিৎসার জন্য আসেন শয়ে শয়ে রোগী। সেই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালেরই বেহাল পরিস্থিতি,বছরের পর বছর ধরে, হাসপাতালে কর্তব্যরত কর্মীরা বলেন, 'একাধিক বার ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসন সকলকে জানানো হয়েছে কিন্তু হাসপাতাল মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়নি কেউ। গ্রীষ্ম কাল পার হয়েছে বর্ষা আসলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে চরম। তাই বাড়ি থেকে আসার সময় বাড়িতে বলে আসি ফিরব কিনা কোন আশা নেই, তার কারণ যেকোনও সময় মাথার উপর ভেঙ্গে পড়তে পারে হাসপাতাল।
আরও পড়ুন : পার্থর 'প্রস্তাব' ফেরালেন জেলে জ্বরে কাতর অর্পিতা! বিপদে আজ 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' শুধুই 'ওরা'
হাসপাতালে এক কর্মী তার অভিজ্ঞতার কথা বলেন কয়েক দিন আগেই হাসপাতালের মধ্য থেকে মাথায় হেলমেট পড়ে তিনি বেরিয়ে আসছিলেন সেই সময় চাঙড় খসে পড়ল তার মাথার উপর, হেলমেট থাকার জন্যই প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। বেহাল পরিস্থিতি হাসপাতালের ভয়ে আসছে না চিকিৎসকরা, এমনি মনে করছে অনেকেই। চিকিৎসক না আসলে নার্স ফার্মাসিস্ট বা ডি গ্রুপের কর্মীরাই রোগী দেখেন প্রেসার মাপেন প্রেসক্রিপশন লেখে ঔষধ লিখে দেন।
গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বেহাল হাসপাতালের জন্যই এলাকাবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এলাকার মানুষরা বলছেন কোন রাজনৈতিক দল হাসপাতালের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না । চিকিৎসক থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর সকলেই চাইছে দ্রুত হাসপাতালটি মেরামতের ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। এ বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে ব্লকের বিডিও সকলেই বলেন, "পরিস্থিতির কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে আমরা চাই দ্রুত হাসপাতাল মেরামত করা হোক।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম গুপ্ত বলেন রাজ্যস্তরে হাসপাতাল মেরামতের প্রপোজাল পাঠানো হয়েছে দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে যে হাসপাতালে এমনই পরিস্থিতি সে হাসপাতাল কবে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে মেরামত করে সেটি এখন দেখার।
সুকান্ত চক্রবর্তী