বীরভূম জেলার নলহাটি থানার বুজুং গ্রামের বাসিন্দা অমিয়কুমার মন্ডল। বুকে ব্যথা, হাঁপানি, দুর্বলতা, মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার উপসর্গ নিয়ে তিনি ১০ আগস্ট বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকেরা দেখতে পান তার হার্টের একটি ভাল্ব পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অমিয়বাবু বয়সের কথা চিন্তা করে অনাময় হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে প্রধান ডাঃ দীপঙ্কর ঘোষদস্তিদার বুক না কেটে এই অ্যারোটিক ভাল্ব প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব দেন।
advertisement
ভাল্বের দাম ১০ লাখ টাকা। এরসঙ্গে অন্যান্য খরচ যোগ করলে সেটা আরও ৩ লক্ষ টাকা। মোট তেরো লক্ষ টাকা খরচের পুরোটাই বহন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। রোগীকে পুরো চিকিৎসাই করা হয়েছে বিনামূল্যে। 13 আগস্ট সাফল্যের সঙ্গে এই অপারেশন হয়। বুধবার হেঁটে বাড়ি ফিরলেন অমিয়কুমার মন্ডল।
আরও পড়ুন: হাতির হানায় প্রাণ গিয়েছিল ব্যক্তির, ক্ষতিপূরণ নিতে এলেন ছয় স্ত্রী! হতবাক বন বিভাগ
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সার্জেন দীপঙ্কর ঘোষদস্তিদার বলেন, “এটাই আগামী দিনের চিকিৎসা। অ্যারোটিক ভাল্ব বদল করার জন্য আর বুক কেটে অপারেশন করতে হবে না। আমরা গর্বিত, আমরাই রাজ্যের দ্বিতীয় সরকারি হাসপাতাল যারা এই কাজ সফলভাবে করতে পেরেছি। এটা আগামীদিনের জন্য একটা পদক্ষেপ হয়ে থাকল”।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপসকুমার ঘোষ বলেন, “রাজ্যের মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালের পরে এই প্রথম কোন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই অপারেশন করা হলো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ট্রান্সক্যাথেটার অ্যারোটিক ভাল্ব ইমপ্ল্যান্টেশন বা টিএভি। আমরা স্বাস্থ্য ভবনের কাছে কৃতজ্ঞ টিএভি পদ্ধতিতে এই অপারেশন করার ব্যবস্থা করে দেবার জন্য। দীপঙ্কর ঘোষদস্তিদার স্যার খুবই চেষ্টা করেছেন। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় রোগী সুস্থ হয়ে আজ বাড়ি ফিরে গেলেন। রাজ্যের মধ্যে আমরাই দ্বিতীয় সরকারি হাসপাতাল যারা এই জটিল কঠিন অপারেশন করে সফলতা পেলাম। আগামীদিনেও আমরা আরও এই অপারেশন করতে পারব।”