অভিযোগ,বিজ্ঞান কংগ্রেসের মঞ্চকে রাজনীতির মঞ্চ করে তুললেন খোদ মন্ত্রী। শুক্রবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম আঞ্চলিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কংগ্রেসের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন স্কুলে অনেক ল্যাবরেটরি তৈরি করা আছে। সবটাই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আছে, তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। প্রতি বছর যদি ইচ্ছা করলে একশোটা স্কুলে পৌঁছে দিতে পারতাম তাহলে নিশ্চিত ভাবে বিজ্ঞান এমন জায়গায় পৌঁছাত আমাদের বাংলায়। এমনিতেই সারা ভারতবর্ষের মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলার কাজ দেখে। তারপর বিজ্ঞান যদি এগিয়ে যায় তাহলে। ভারতবর্ষের মানুষ সবাই এখন সব জায়গায় কাজের জন্য চায় মমতা লাও দেশ বাঁচাও, এখন বলে মমতা লাও ভারতবর্ষের মানুষ বাঁচাও।"
advertisement
অনুষ্ঠান শেষে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি বলে কোন অন্যায় করিনি। তিনি জানান, হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস টুডে ইণ্ডিয়া থিংকস টুমরো। এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই সেটা বলতে আপত্তি নেই। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চিন্তাভাবনা বিজ্ঞানের সমতুল্য বলেও দাবী করেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস ।
আরও পড়ুন: জাঁকিয়ে শীত আর ক'দিন? কোথাও বাড়ছে কুয়াশা, কোথাও শৈত্যপ্রবাহের সর্তকতা! আবহাওয়ার বড় আপডেট
এই নিয়ে সভার শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন,'বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত তা কাল ভাবে।রাজ্যে এখন মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা আসবে। সেই ভাবনা থেকেই বিজ্ঞানকে বাঁচানোর জন্যে মমতাকে দরকার বলে আমার মনে হয়েছে।"তবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা বলেন, "ঐতিহ্যশালী স্থান, জলাশয়, পুরাকৃতি এইসবকে বাঁচিয়েও কী ভাবে নগরোন্নয়ন করা সম্ভব, তা নিয়েই বিজ্ঞান কংগ্রেসের গবেষকরা সুচিন্তিত মতামত রাখবেন বলেই মনে করি।এছাড়াও গ্রাম গুলিকে নতুন করে গড়া এবং কৃষি ও মত্স্যতে নতুন উদ্ভাবনী শক্তির ব্যবহার নিয়েও বিজ্ঞান কংগ্রেস দিশা দেখাতে পারে ।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ করেছিল ছেলে, বদলা নিতে মাকে গুলি করল কিশোরী! চাঞ্চল্য় দিল্লিতে
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে বক্তব্য রাখতে উঠে মন্ত্রীউজ্জ্বল বিশ্বাস এদিন আরও বলেন,এ রাজ্যে কতগুলি উচ্চশিক্ষা দফতরে বা কতগুলি স্কুলে গবেষণাগার চালুরয়েছে তা অনেকের কাছেই অজানা রয়েছে। সেদিকে আমরা তাকিয়েও দেখি না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই ব্যাপারে ব্যাপকভাবে নজর দিয়েছেন। শুধু ভারতবর্ষ নয়, সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তারা আমাদের কাজ দেখে। বিজ্ঞানে আমদের বাংলা যদি এইভাবে এগিয়ে যায়, তাহলে গোটা ভারতবর্ষের মানুষই বলবেন, 'মমতা লাও, দেশ বাঁচাও'।
মন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গোস্বামী বলেন, মন্ত্রী বক্তব্য রাখার সময়ে দল ও প্রশাসন সব গুলিয়ে ফেলেছেন এটা দুর্ভাগ্যজনক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের ক্ষেত্রেও প্রশ্ন তুলে দেওয়ার মত। অপর শিক্ষক অভয় মণ্ডলের বক্তব্য,বিজ্ঞান কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে গবেষকদের সামনে এমন কথাবার্তা বাঞ্ছনীয় নয়। এতে ভুল বার্তা যায়। আর ঘটনা বৃত্তান্ত শুনে বিজেপির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা স্থান, কাল,পাত্র এইসব বোঝেন না।তাঁরা সব জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা দেখতে পান। আর সেটা করতে গিয়েই এদিন মন্ত্রী ঐতিহ্য নষ্ট করে ফেলেন।" পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,বিজ্ঞানে এই রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে। তাই মন্ত্রী ভুল কিছু বলেননি।