আরও পড়ুন- প্রজনন ক্ষমতা তলানিতে! জনসংখ্যা যে হারে কমছে, শীঘ্রই ‘বিলুপ্ত’ হতে পারে…! জানেন কোন রাজ্য?
এছাড়াও শাড়ির মধ্যে যে নকশা থাকে সেই নকশা বোনা হয়, কখনও ছাপা হয়না। এছাড়াও এই ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরিধান করার বিভিন্ন কায়দা রয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বেশ কিছু তাঁতি এখন এই মেখলা শাড়ি প্রস্তুত করেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা বেকার ছিলেন তাদের মধ্যে থেকে আবার অনেকেই নতুন করে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
advertisement
জানা গিয়েছে, পাটের সুতো দিয়ে এই মেখলা শাড়ি তৈরি হচ্ছে এবং যা পাঠানো হচ্ছে আসামে। স্বভাবতই বর্তমানে কাজের সুযোগ পেয়ে অর্থ উপার্জন করছেন অনেকেই। সবশেষে বলাই যায় আসামের মেখলা শাড়ি তৈরি করেই হাল ফিরতে শুরু করেছে পূর্বস্থলীর তাঁতিদের।
এই প্রসঙ্গে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুরের বাসিন্দা তপন বসাক বলেন, আগে তাদের তাঁতের অবস্থা খুব ভাল ছিল। কিন্তু লকডাউনের পর সুরাট, বাংলাদেশের শাড়ি এবং পাওয়ারলুম এসে তাদের অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা আসামে যোগাযোগ করে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী মেখলা শাড়ি তৈরি করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। তিনি আরও বলেন পূর্বস্থলীর আশপাশের এখন অনেকেই এই শাড়ি তৈরি করছেন।
আরও পড়ুন- শুধু রাস্তা দেখায় না, গুগল ম্যাপসের রয়েছে আরও ১৫টি ‘আশ্চর্য’ ব্যবহার! আপনি ক’টা জানেন?
একটা সময় পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর তাঁতিদের বিশ্রাম নেওয়ার সময় থাকত না! প্রায় প্রত্যেকটা বাড়িতেই ছিল তাঁত যন্ত্র। আর সেই তাঁত যন্ত্রে শাড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত থাকতেন বর্ধমানের পূর্বস্থলীর অধিকাংশ মানুষ। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন বাড়ির মহিলারাও। পূর্বস্থলীর শাড়ি একসময় বাজার দাপিয়ে বেড়াত। এক হাজার থেকে শুরু করে এক লক্ষ টাকা মূল্যের চোখ ধাঁধানো শাড়িও তৈরি করতেন পূর্বস্থলীর তাঁতিরা। এখানকার শাড়ি দেশ ছাড়িয়ে বহুবার পাড়ি দিয়েছে বিদেশেও। তাঁতের শাড়ি তৈরি করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছেন বেশ কিছু তাঁতি। এককথায় বলতে গেলে পূর্বস্থলীর তাঁতিদের একসময় রমরমা বাজার ছিল।
পুরোদমে সারাদিন ধরে তাঁতিরা শুধুমাত্র ব্যস্ত থাকতেন তাঁত নিয়েই। জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যেত এখানকার শাড়ি। কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে অন্ধকার নেমে আসে পূর্বস্থলীর তাঁতিদের জীবনে। তবে শুধু লকডাউন নয় , একদিকে সুরাটের শাড়ি এবং অন্যদিকে পাওয়ারলুম এসে একবারে শেষ করে দেয় পূর্বস্থলীর তাঁতের বাজার। এর জেরে কাজ হারাতে হয়েছে পূর্বস্থলীর বহু মানুষকে। বাড়ির তাঁত যন্ত্র বিক্রি করে, পেটের দায়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন অনেকেই। তবে বর্তমানে আবার ধীরে ধীরে হাল ফিরতে শুরু করেছে পূর্বস্থলীর তাঁতিদের।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী