এখন তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে চারজনের সংসার। প্রায় বছর ১৭ আগে যে হাত ধরেছিল দুজনে, এখনও সেই হাত শক্ত করেই ধরে রয়েছে তাঁরা। দেখেশুনেই, ভালোবেসে শারীরিকভাবে বিশেষ সক্ষম মেয়েকে বিয়ে করে অনুকুল। স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে আসা বিশেষ সক্ষম কাকলিকে ধীরে ধীরে ভালবাসতে শুরু করে। সমাজ, পরিবারের ঊর্ধ্বে গিয়েও সামাজিক স্বীকৃতি দেয় কাকলিকে। অনুকূলের স্ত্রী কাকলি জানা। কাকলি কথা বলতে পারে না, শুনতে পায় না কানে। তবে ইশারায় তাদের ভালোবাসা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কানে শুনতে না পেলেও মনের কথা শুনতে পায় কাকলি। এভাবেই একটা একটা বছর করে প্রায় ১৬ বছর সুখী দাম্পত্য জীবন পেরিয়েছে তারা।
advertisement
আরও পড়ুন – Vastu Tips: বজরংবলীর আরাধনায় পালন করতে হয় কঠিন ব্রত, ভুলেও উল্টোপাল্টা জায়গায় রাখবেন না মূর্তি
জীবন শুরু থেকেই কাকলি কথা বলতে পারেনা, শুনতে পায়না কানে। কিন্তু বিদ্যালয়ে আসার পর ধীরে ধীরে একে অপরকে ভালোবাসে। যখন সকলেই রূপ, সৌন্দর্য, গুণ, সক্ষমতা প্রেমে পড়ে তখনই ব্যতিক্রম ভাবনা নিয়ে ভালোবেসেছিল অনুকূল। অনুকুল হয়তো জেনেছিল তার সামনে কঠিন এক পরিস্থিতি। তবুও চোয়াল শক্ত করে ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল সে। প্রথম জীবনে নানান সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনুকূলকে। পরিবারের উপর দিয়ে গেছে ঝড়ও, তবুও একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত পেরোচ্ছে তারা।
ভালোবাসার সময়ে অনুকূলের মাত্র সামান্য কটা টাকা রোজগার ছিল। অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে যে টাকা রোজগার হতো তাতেই চলতে সংসার। শুধু তাই নয়, কাকলিকে ভালোবেসে বিয়ে করার পর শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে নানান সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছে। তবে কথা না বলতে পারার মধ্যেও যে অনেক কথা লুকিয়ে থাকে তা বুঝতে পারে অনুকূল। এখন দিব্যি স্বাচ্ছন্দেই থাকেন সকলে। অনুকূল-কাকলির মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে, ছেলে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অনুকূল স্থানীয় একটি বেসরকারি বিদ্যালয় গ্রুপ-ডি কর্মী। কাকলি পরিবার সামলেও ছবি আঁকে। মনের ভাব-ভাবনাকে প্রকাশ করে সাদা কাগজে পেন্সিলের আঁচর কেটে। আর সেই বিশেষ শিল্পকর্মে সাহায্য করে তার স্বামী অনুকূল।
তবে দিন যত গড়াচ্ছে ভালোবাসায় কমতি নয়, বরং বেড়েই চলেছে। রুপ, সৌন্দর্য, গুণের বাইরে গিয়েও অনুকূল প্রমাণ করেছে ভালোবাসাকে। শতবর্ষ টিকে থাকুক এমন ভালোবাসা। সমাজ, সামাজিকতা, নিচু মানসিকতার বাইরে গিয়েও উদার মনোভাবের প্রকৃষ্ট উদাহরণ অনুকূল ও কাকলির প্রেম।
Ranjan Chandan




