প্রসঙ্গত ঠিক সেই খেলার বয়সে হারিয়েছে বাবাকে৷ মায়ের সঙ্গে মাঠে ধান পোঁতার কাজ করে তারই ফাঁকে কোনোভাবে পড়াশোনা। আর এভাবেই আদিবাসী অধ্যুষিত বোলপুর শান্তিনিকেতনের সাহেবডাঙা গ্রাম থেকে প্রথম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন দুই বীরাঙ্গনা। এর আগে এই গ্রাম থেকে কেউ এই গণ্ডি পার করেনি৷ তাই সুমিত্রা টুডু ও বাসন্তি টুডুর চোখেই আগামীর সাফল্য দেখছে গ্রামের আর পাঁচটা খুদে পড়ুয়ার।
advertisement
আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে থেকে প্রেমিককে দিয়ে নিজের মেয়েকে জোর করে সঙ্গম করানোর অভিযোগ! ধৃত মা এবং প্রেমিক
তাদের নিয়ে উচ্ছ্বাসিত পুরো গ্রাম৷ তবে নিজেদের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল আটকাতে পারলেন না সুমিত্রা, বাসন্তীর ও তাদের মায়েরা। গ্রামে বাল্য বিবাহ রদ ও শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলাই লক্ষ্য দুই ছাত্রীর৷ প্রসঙ্গত, কথাই রয়েছে প্রদীপের নীচেই অন্ধকার৷ আন্তজার্তিক খ্যাতি সম্পন্ন শহর বোলপুরের অদূরে কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সম্পূর্ণ আদিবাসী অধ্যুষিত সাহেবডাঙা গ্রাম৷
শান্তিনিকেতন থানার এই গ্রামে অধিকাংশই কাঁচা বাড়ি, নেই পর্যপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা৷ একটি নলকূপ ভেঙে গেলে অন্যটির উপর পুরো গ্রামের ভরসা, অপরিচ্ছন্ন পুকুর, ভাঙাচোরা রাস্তা। গ্রাম সড়ক যোজনা পৌঁছায়নি এই সাহেবডাঙায়৷ এই গ্রাম প্রায় ৪৬টি পরিবারের বসবাস। গ্রামে নেই কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ একটি মাত্র শিশুশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এক কথায় যে কোনো ভাবেই উন্নয়নের আলো পৌঁছায়নি এহেন গ্রাম থেকে প্রথম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ হল বোলপুর শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের ছাত্রী বাসন্তি টুডু ও সুমিত্রা টুডু।
আগে গ্রামের কেউ এই গণ্ডি পার করেনি৷ উল্লেখ, এই বীরভূম জেলায় রয়েছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক কলেজ৷ শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতির পীঠস্থান বোলপুর-শান্তিনিকেতন। অথচ বিশ্বভারতী থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে শিক্ষার আলো পৌঁছল এতকাল পর৷ তাও এই দুই ছাত্রীর হাত ধরে। সৌভিক রায়





