পূর্ব বর্ধমান জেলার পাল্লা ৩ নং ক্যাম্প এলাকার দুই মৃৎশিল্পী মীরা মণ্ডল এবং কিরণ ক্ষেত্রপাল। ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি মাটি নিয়ে পুতুল গড়া, নানান মূর্তি গড়ার নেশা ছিল তাঁদের। শিল্পের প্রতি ছিল এক অদ্ভুত টান। স্কুল থেকে ফেরার পথে দাঁড়িয়ে দেখতেন ঠাকুর তৈরির কাজ। আজ সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের এই দুই মৃৎশিল্পী। মৃৎশিল্পী বিপ্লব মিত্রের কাছে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ শিখেছেন তাঁরা।
advertisement
আরও পড়ুন : চরম বিপদসীমা ছুঁতে আর মাত্র কয়েক মিটার! বিশেষ টিম সেচ দফতরের! কেলেঘাই যেন গিতে খেতে আসছে
এখন তাঁর কাছেই কাজ করেন তাঁরা। সারা বছর প্রতিমা নির্মাণ করেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। এবছর তাঁদের তৈরি দুর্গা প্রতিমাও স্থান পেয়েছে জেলার একাধিক মন্ডপে। সাহায্যের জন্য কারোর কাছে হাত না পেতে, নিজেদের দক্ষতার মাধ্যমে পরিশ্রম করে স্বাবলম্বী হতে চান দুজনে। মীরা ও কিরণ বলেন, এখনও মাঝে মাঝে শুনতে হয় নানান কথা। তবে এখন অনেকেই আমাদের কাজের প্রশংসা করেন। ছোট থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম আমরা আর পাঁচজনের থেকে আলাদা। কারণ তখন থেকেই সমাজ আমাদের আলাদা ভাবে দেখত।
আরও পড়ুন : হাসিমারায় রেকর্ড বৃষ্টি, ‘লাল চোখ’ দেখাচ্ছে তোর্ষা, নজর দিতে ভয় লাগবে! চোখের পাতা এক করার উপায় নেই
শুনতে হয়েছে নানান কটুক্তি। তবে কিছু করে দেখানোর লক্ষ্য নিয়ে আজ আমরা স্বাবলম্বী। মৃৎশিল্পী বিপ্লব মিত্র বলেন, ওরা দুজন খুব ছোট থাকতেই কাজ করছে এখানে। ওঁরা যখন এদিক দিয়ে স্কুল যেত, তখন দেখতাম শিল্পীরা যে নজরে কাজটাকে দেখে, ওঁরাও সেই নজরে কাজটা দেখছে। আমি সবাইকে বলব ওরাও মানুষ। তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি বলে ওঁদের আলাদা চোখে দেখার কিছু নেই। ওরাও কোন না কোন মায়ের সন্তান। ওদের অন্য চোখে না দেখে যেন কাজ করার সুযোগ করে দেয় ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মীরা ও কিরণের এই যাত্রা সমাজের তথাকথিত বেড়াজাল ভেঙে নিজেদের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া, সকলের কাছে অনুপ্রেরণার। তাঁরা প্রমাণ করেন, কোন লিঙ্গের বা তাঁদের পরিচয় কি, এটা বড় নয়। ইচ্ছাশক্তি ও কর্মই হল শেষ কথা।