বলাগরের ব্যানার্জি পাড়ার বাসিন্দা সুজিত আর তাঁর ভাই সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন হাওড়া কাটোয়া লোকাল ধরে। গন্তব্যস্থল বলতে কিছুই নেই, শুধু পেটের টানে হকারি করতে বেরিয়ে যেতে হয় তাঁকে। সারাদিন ধরে ট্রেনে ফল বিক্রি করে কখনও ১০০, কখনও আবার ১৫০ টাকা আয় হয়। ঘরে ফিরেই একরাশ স্বপ্ন চোখে নিয়ে বসে পড়েন নিজের শিল্পের কাজে।
advertisement
ঘর বলতে আবার তেমন কিছু নয়, সামান্য একটি একচালা টালির ছাউনির ঘর। বাইরের রাস্তায় বসে আপন মনে তৈরি করে ফেলে নানা রকমের কারুকার্য। তবে শুধুই নিজের খুশিতে নয়, অনেক সময় আবার বায়না আসে। সামান্য কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সুজিতের হাতে সেজে ওঠে হাজার হাজার সৃষ্টি।
অভাবের তাড়নায় ঠিকমতো খাওয়া জোটানো দায়, তাই পড়াশোনা করা এই ঘরে যেন বিলাসিতা। কোনও রকমে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন দাদা। ভাইয়ের পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। পড়াশোনা না করার আক্ষেপটা তাই একপ্রকার বুজে এল সুজিতের গলায়। কোনও প্রশিক্ষণ তালিম বা গুরুর কাছ থেকে অনুশীলন নয়, কেবল ভালবাসা থেকেই তৈরি করে ফেলেন একের পর এক অনবদ্য সৃষ্টি।
আরও পড়ুন: ‘ত্রিদোষ প্রশমক’ আপনার ঘরের পাশেই! এই গাছের পাতা-ডাঁটা সর্বরোগহরা, জাদুকরী গাছ সারাবে মারণরোগ
সুজিত তাঁর শিল্পীসত্তার মূল্য হয়তো তিনি সঠিক পান না। তবে সুজিতের হাতের কাজ দেখে বর্তমান সময়ে বেশ কিছু মানুষ তাঁর কাছে আসছেন নতুন কিছু বানিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। যৎসামান্য পারিশ্রমিকেই কাজ করে চলেছেন তিনি।
রাহী হালদার