শীত শেষ হতেই পাতা ঝরা গাছে লাল হলুদ ফুলের থোকা গাছে গাছে। এক অপরূপ দৃশ্য, চোখ জুড়িয়ে যায়। সেই দৃশ্য উপভোগ করতেই মানুষ শুধু পুরুলিয়া ছুটে যান। অনেকটা সেই সুযোগ নাগালের মধ্যে পেয়ে ভীষণভাবে উৎসাহিত মানুষ।
advertisement
গাছের নিচে শুকনো পাতা আগাছার উপর পড়ে লাল হলুদ পলাশ। সব মিলিয়ে এক অন্য দৃশ্য হাওড়ার মাটিতে। কংক্রিটের শহরে হুগলি নদীর অদূরে এই স্থান অনেকখানি পুরুলিয়ার প্রকৃতিকে মনে করিয়ে দেয়। যেকারনে ভিড় জমাচ্ছেন ৮-৮০ বয়সের মানুষ। এই পলাশের ছোট্ট জঙ্গলে রঙিন আবির আর নাচে গানে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠছে মানুষ। এ যেন বসন্তের শান্তি নিকেতনের এক ফালি ছবি ধরা পড়ছে।
ছোট-বড় গাছে যত ফুলের থোকা দেখা মিলছে। ততই যেন মানুষের বাড়ছে ভিড় এখানে। প্রতিদিন দুপুর হলেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছে বেলুড় ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে। কর্মব্যস্ততার মধ্যে হাতে অল্প সময়ে এই বসন্তের আবহে মন ভাল করতে কে-না চায়। তাই হাতের কাছে এই সুযোগ হাত ছাড়া করতে নারাজ অনেকেই। তাই ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ পৌঁছাচ্ছেন। বন্ধুবান্ধব প্রিয়জন মিলে মিশে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠছেন এই পলাশ বনে।
কেউ গাছের তলা শুকনো পাতার উপর থেকে লাল হলুদ পলাশ তলে মালা গাঁথছেন। আবার কেউ চুলের খোপা অথবা মাথায় মুকুটের ন্যায় জড়িয়ে নিচ্ছেন পলাশ। এই পলাশ বনে, সেলফি তোলার হিড়িক তো রয়েছে। আবার লেন্স বন্দি করতে হাজির হচ্ছেন বহু ফটোগ্রাফার। সব মিলিয়ে বেলুড় ইএসআই হাসপাতাল এই বসন্তে হয়ে উঠেছে পলাশ ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের ঠিকানা।
এখানে আসা পর্যটক কেন্দ্র করে দু’একখানা মুখরচোখ খাবারের দোকানও হাজির। যা আরও উৎসাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে মানুষের। এখানে আসা মানুষের কথায় জানা যায়, এক কথায় মন ভরে যাচ্ছে। কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও পলাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার অভিজ্ঞতা অন্য একটা তৃপ্তি। কাজের চাপ বা নানা কারণে, পুরুলিয়া যাদের যাবার সুযোগ হয়ে ওঠে না। তাদের জন্য এই বসন্তের আনন্দ উপভোগ করার আদর্শ স্থান হাতের কাছে। কেউ জানাচ্ছেন, দিন কয়েক আগে পলাশের সাম্রাজ্য পুরুলিয়া ঘুরেছেন তখনও সেখানে সব গাছে ফুল ধরেনি। নিরাশ হয়েই ফিরত হয়েছে বাড়ি। তবে বেলুড়ের এই ছোট্ট জঙ্গলে গাছে গাছে লাল হলুদ পলাশ দেখে মুগ্ধ করেছে মন।
ছোট বড় অসংখ্য পলাশ গাছ। যত দিন গড়াবে গাছ পরিণত হয়ে বাড়বে ফুল ফোটার গাছের সংখ্যা। তাই আগামী দিন বলা যেতে পারে আরও আকর্ষণীয় হতে চলেছে এই পলাশের জঙ্গল। বেলুড় স্টেশন থেকে খুব কাছেই, আবার জিটি রোডের সামান্য দূরত্বে হাওড়া বেলুড়ের পলাশের এই ছোট্ট জঙ্গল।
রাকেশ মাইতি