বিধায়ক নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, 'আপনারা জানেন মাত্র পনেরো ষোলো দিন আগে গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটের সন্নিকটে রাতের আধারে হানা দিয়ে আমি দু'খানা অবৈধভাবে বালি পাচারকারী ট্রলার আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ছিলাম। এক ট্রলার চালক চোদ্দ দিন হাজত বাস করে সদ্য ছাড়া পেয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এবার হয়তো অবৈধ বালি উৎখনন বন্ধ হবে। কোথায় কী! সেই একই বালি মাফিয়া একই জায়গা থেকে এক ভাবেই আট দশ খানা ট্রলার চালিয়ে রাতের আধারে তার কাজ কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল। কোনও বারণ মানছিল না। ও যেমন বুনো ওল আমিও তেমন বাঘা তেতুল! তাই গতকাল আবার ভোর রাতে হানা দিয়ে ওই এক জায়গায় একই কায়দায় পাকড়াও করেছি দুখানা বালি বোঝাই ট্রলার। বাকিগুলো পালিয়ে গেছে। সে দু'টো জমা করেছি গুপ্তিপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে।'
advertisement
বিধায়কের কথায়, "আমার এই কাজ এলাকার মানুষ খুব প্রশংসা করেছেন। গুপ্তিপাড়া ফাঁড়ি বা বলাগড় থানাও আমাকে সহযোগিতা করছেন। ফোন করার পাঁচ দশ মিনিটের মধ্যে পৌছে যাচ্ছেন ঘটনাস্থলে। আমাদের দলনেত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চান যে কোন ভাবে এই অবৈধ বালি মাটি পাচার বন্ধ করতে। অবৈধভাবে বালি মাটি তোলার জন্য গঙ্গার পাড় ভাঙ্গছে। বহু বসতবাড়ি জমি জিরেত স্কুল গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাকে এভাবে রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: শিশুর রহস্যমৃত্যুতে ৭ দিন পরও অধরা অপরাধী, এসডিপিওকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ
বিধায়কের অভিযোগ, "সবাই প্রশংসা করলেও অঞ্চলের বিজেপি নেতারা আমার বিরুদ্ধে বলছেন। কারণ কী জানেন? ওই বালি মাফিয়া একজন বিজেপির কর্মী। আমার কাছে তার প্রমান আছে। যদি তারা চায় আমি সেই প্রমাণ তার নাম ধাম সব পেশ করতে পারি। দলের কর্মী বিপদে, ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার, বিজেপি নেতাদের কষ্ট তো হবেই।"
আরও পড়ুন: বাড়ল না অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ, ফের জেলে গেলেন ছত্রধর
কিন্তু রাতের বেলা বিধায়ক অভিযানে যাচ্ছেন কেন? মনোরঞ্জন বাবু জানিয়েছেন, " আমার কী বিধায়ক হয়ে এসব করতে ভাল লাগে! কিন্তু কী করা যাবে! ওরা যতদিন সংশোধিত না হবে আমাকে আমার কাজ করে যেতেই হবে। বলাগড়ের মানুষ তো আমাকে বৃষকাঠের মতো মাত্র দাড়িয়ে থাকার জন্য ভোট দেয়নি। দিদি মমতা ব্যানার্জীও আমাকে কাঠের পুতুল বানাবেন বলে বলাগড়ের টিকিট দেননি। তিনি কাজের মানুষ আমার কাছ থেকেও কাজ আশা করেন। তাই যতক্ষণ দেহে প্রান থাকবে আগাছা সাফ করতেই হবে। গতকাল দেখলাম অনেক প্রিয়জন ফেসবুকে আমার প্রানের আশঙ্কা করছেন। তাদের উদ্দেশে বলি, আমি দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তাই কোনো ভয়ের সামনে নত হব না। প্রলোভনে বিকিয়ে যাব না। অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না। যদি মরণ আসে তো আসুক না! আমি সেই মৃত্যু কামনা করি যেমন মৃত্যু নিয়োগীজী বরন করেছেন। সেই মরণকে স্বাগত!"
ABIR GHOSHAL