গত ৪ জানুয়ারি বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর কার্যালয় ভাঙচুর হয়। তার আগে ভুবনেত্রী রুনা খাতুনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে আক্রমণ করেন বিধায়ক। বেশ কিছুদিন ধরে যুবনেত্রী বনাম বিধায়কের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত ছিল বলাগড়। দ্বন্দ্ব, কাদা ছোড়াছুড়ি এমন পর্যায় পৌঁছে যায় যে বিধায়ক, রুনা এবং তাঁর স্বামী অরিজিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে লাগাতার আক্রমণ করতে থাকেন। বিধায়কের অফিসও ভাঙচুর হয়৷ রুনা বলাগড় থানায় বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এতকিছুর পর দল হস্তক্ষেপ করে।
advertisement
মঙ্গলবার বলাগড় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ও যুব নেত্রী রুনা খাতুনের দ্বন্দ্ব মেটাতে তৃণমূলের ম্যারাথন বৈঠক হয়। ত্রিবেনীর বিটিপিএস গেস্ট হাউসে বৈঠকে ছিলেন জেলা চেয়ারপারসন অসীমা পাত্র, সভাপতি অরিন্দম গুঁইন, মনোরঞ্জন ব্যাপারী, রুনা খাতুন, বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক বর্তমান জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ অসীম মাজি,মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী শিল্পী চট্টোপাধ্যায়,বলাগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় সহ বলাগড় ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: হাতে পলাতক শাজাহানের ছবি, সন্দেশখালিতে কী শপথ নিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা?
বৈঠক শেষে হুগলি জেলায় তৃণমূলের চেয়ারপার্সন অসীমা পাত্র দাবি করেন, তৃণমূল পরিবার বড় হয়েছে, তাই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল৷ এই ভুল বোঝাবুঝিকে ছেলেমানুষি ঝগড়া বলে দাবি করেন জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। একসঙ্গে চলার মন্ত্র দেওয়া হয় দুজনকে।
বৈঠক শেষে যুবনেত্রী রুনা খাতুন বলেন, ‘বলাগড় ব্লকে যাঁরা তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করেছেন, তাঁদের সবার লক্ষ একটাই, দলের অনুশাসন মেনে চলা।দলকে শক্তিশালী করা। দলের জন্য আমি জেলা পরিষদ সদস্য হয়েছি। তাই দলের অনুশান সবার আগে। মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে বলাগড় থানায় যে অভিযোগ করেছিলেন সেটা নিয়ে দলের ভিতরে আলোচনা হয়েছে।’
মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, ‘আজকে জেলা নেতৃত্ব আমাদের নিয়ে বসেছিলেন। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা শিরোধার্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে ধুলো থেকে তুলে সোনার মতো মূল্যবান বানিয়েছেন। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে থেকে সিঙ্গুর আন্দোলনে বাইরে থেকে ছিলাম। যতদিন বাঁচব দিদির লড়াইয়ের সঙ্গে থাকব। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী।’
যদিও এই বৈঠক শেষ হওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বলাগড়ের বিধায়ক৷ সেখানে তিনি লেখেন, ‘হনুমানগঢ়ীর লাডডু জি আই তকমা পেয়েছে। ওই তকমা জয়নগরের মোয়াও পেয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি লাডডু খাবেন, না জয় নগরের মোয়া। অপশন মাত্র একটা। হয় মোয়া নয় লাডডু। মোয়া খেলে আমি আপনার লোক। লাডডু খেলে ওদের। পক্ষ আপনাকেই বাছতে হবে।’