চাকরি ফিরে না পাওয়ার জ্বালা-যন্ত্রণা নিয়েই নিজের বাড়িতে বসে সেদিনের একুশে জুলাইয়ের কথা ভেবে রীতিমতো অনুশোচনায় ভুগছেন সিরাজুল-সহ তাঁর গোটা পরিবার। গাইঘাটা থানা এলাকার ইছাপুরের ভদ্রডাঙার বাসিন্দা সিরাজুলের কথা জেনে ২০২৩-এর একুশে জুলাইয়ের পর ফোন করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: মোবাইল নম্বরে ২ সংখ্যাটি থাকলে জীবনে কী প্রভাব পড়ে জানেন? রইল বিশেষজ্ঞের মতামত
advertisement
কথা হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। সিরাজুলের সঙ্গে কথা বলে, এককালীন ৫ লক্ষ টাকা সাহায্যেরও কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, সিরাজুল তাতে রাজি না হয়ে, মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করে চাকরি ফেরতের আর্জি জানান। নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে সিরাজুল তুলে ধরেন সেদিনের ঘটনার কথা। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচাতে গিয়ে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার দীনেশ বাজপেয়ীর দিকেই বন্দুক তাক করেছিলেন কলকাতা পুলিশের এই কনস্টেবল সিরাজুল হক মণ্ডল।
আরও পড়ুন: শ্রাবণ সোমবারের উপোস রাখবেন? মেনে চলুন এই বিশেষ রীতি, কোন খাবার ভুলেও ছোঁবেন না জানুন
সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচাতে পারলেও, নিজের চাকরি বাঁচাতে পারেননি তিনি। ঘটনার কথা শুনে নবান্নে বসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে মুখ্যসচিব, তৎকালীন অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের দায়িত্ব সামলানো বি পি গোপালিকাকে নির্দেশ দেন সিরাজুলের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার। সেদিনের পর থেকে কেটেছে আরও এক বছর, এদিন একুশে জুলাই শহিদ মঞ্চ থেকে যখন তৃণমূল নেত্রী ভাষণ দিচ্ছেন, তখন সভামঞ্চ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে টিনের চাল দেওয়া বেড়ার ছোট্ট ঘরে ছেলের জন্য চোখের জল মুছতে দেখা গেল সিরাজুলের মা রুকবানু মণ্ডলকে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও কেন এত বছর হয়ে গেলেও চাকরি ফিরে পেলেন না সিরাজুল তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। নানাভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোন উত্তর মেলেনি রাজ্য সরকারের তরফে। পেট চালাতে তাই বর্তমানে দিনমজুরির কাজ করছেন একসময় কলকাতা পুলিশে কর্মরত সিরাজুল। তাই এক চিলতে বেড়ার ঘরে শুয়ে আজও চাকরি ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন “জীবন্ত শহিদ” গাইঘাটার সিরাজুল হক মণ্ডল।
Rudra Narayan Roy