তবে তার ক্রিসমাস বড়দিনের কেক দিয়ে নয়। বাঘিনী ক্রিসমাস সেলিব্রেশন শুরু করল রাইকা পাহাড়ে বিচরণ করা ছাগল দিয়েই। কথাটা শুনতে হাস্যকর মনে হলেও বাস্তবে জিনাতের কর্মকাণ্ড এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ ক্রিসমাস ইভের মধ্যেই ছাগল সাবাড় করল সে। আর এটা ক্রিসমাসের সেলিব্রেশনের চেয়ে কম কীসে!
আরও পড়ুন: ডিমের কুসুমে রক্তের দাগ খেয়াল করেছেন কখনও? এমন ডিম খেয়ে ফেললে শরীরে কী হয় জানেন?
advertisement
বান্দোয়ান বনাঞ্চলে রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে রাজার হালেই ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘিনী জিনাত। বন দফতরের দেওয়া কোনও টোপই গেলেনি সে। তবে খিদের জ্বালা যে বড় জ্বালা। তাই তিনদিন ভুখা থাকার পর রাইকা পাহাড়তলির রাহামদা গ্রামে নিজেই ছাগল শিকার করে পেট ভরাল রয়েল বেঙ্গল বাঘিনী জিনাত। রাইকার জঙ্গলে আসার তৃতীয় দিনে ৫-টি ছাগল শিকার করে সে। এর মধ্যে একটি ৩০ কেজি ওজনের ছাগলের কোমরের অর্ধেকাংশ খেয়ে সাবাড় করেছে সে।
বাকি ছাগলগুলিকে পুরোপুরি খায়নি বাঘিনী। এই ছাগলগুলির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পাঠানো হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর মিলেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ছাগল জখম রয়েছে। এর মধ্যে শোভারাম মুর্মূর চারটি এবং গনেশ বাস্কের একটি ছাগল মারা গিয়েছে। প্রথমে শোভারামের ছাগলের অর্ধেক দেহ উদ্ধার হয়। এরপর একে একে বাকি ছাগলগুলি উদ্ধার করা হয়। রীতিমতো মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ঘুম উড়ে গিয়েছে রাইকা পাহাড় সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দাদের। অনেকখানি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: কাশতে কাশতে গলা চিরে যাচ্ছে? বুকে বসা জেদি শ্লেষ্মা বের করবে এই পাতার রস! অব্যর্থ ওষুধ
সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ক্রমাগতই হেঁটে চলেছিল বাঘিনী জিনাত। তবে বান্দোয়ানের রাইকায় এসে মাত্র কয়েক কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে সে। টোপের কাছে গিয়েও ফিরে যাচ্ছে বাঘিনী। ডিনারে বন দফতর তার জন্য এলাহী আয়োজন করলেও সেসব-এর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না বাঘিনী। তাই নিজেই নিজের খাবারের যোগান করে নিচ্ছে সে। ইতিমধ্যে বনবিভাগের আধিকারিক কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো ও দক্ষিণ-পশ্চিম চক্রের মুখ্য বনপাল বিদ্যুৎ সরকার জানিয়েছেন, যাঁদের ছাগল মারা গিয়েছে বন দফতর তাঁদেরকে সেই ছাগলের মূল্য ফিরিয়ে দেবে। গ্রামবাসীদের নিরাপত্তায় আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জিংগেল বেল, জিংগেল বেল, জিংগেল অল দ্য ওয়ে গানের লিরিক্স গুন গুন করতে করতে স্যান্টা ক্লজের কাছ থেকে গিফটের আশায় থাকে খুদেরা। বড়দিনের আগের রাতে জানালায় মোজাও ঝুলিয়ে রাখে বাচ্চার। তেমনই বছর তিনেকের বাঘিনী জিনাত মনে মনে কল্পনা করেছিল স্যান্টা ক্লজের গিফটের আর তাই একটা দুটো নয় পাঁচ পাঁচটা ছাগল জুটল তার কপালে। তাই বাঘিনী জিনাত ছাগল সাবাড় করেই শুরু করল নিজের ক্রিসমাস সেলিব্রেশন।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি