ক্রমশই এবার বাড়তে শুরু করেছে ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার থেকে জিনাতের দূরত্ব। শনিবার চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবাঁন্ধী এলাকায় রয়েছে। যা ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার থেকে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম জেলার ভোটার থেকে দূরত্ব ছিল ৪ কিলোমিটার।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের কর্মীরা বাঘিনী জিনাতকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাগলের টোপ দিয়ে গভীর জঙ্গলে খাচা বসানো, মহিষ গাছে বেঁধে দিয়ে বাঘিনী কে ঘুমপাড়ানি গুলি করার চেষ্টাও করেছে। কিন্তু সবকিছুতেই ব্যর্থ হয়েছে তারা। অবশেষে ব্রিজিং পদ্ধতি অবলম্বন করতে বাধ্য হয় সিমলিপাল রিজার্ভ টাইগার ফরেস্টের কর্মীরা। কি এই ব্রিজিং পদ্ধতি ?
advertisement
ব্রিজিং পদ্ধতি হল বাঘ যখন নতুন এলাকায় রোমিং করা শুরু করে (নিজের এলাকার চিহ্নিতকরণ করার জন্য একই স্থান থেকে অন্য স্থানে বাঘের যাওয়াকে রোমিং বলা হয়) তখন বিভিন্ন এলাকায় মল এবং মূত্র ত্যাগ করে। পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই মল-মূত্রের ফেরোমেনকে অনুসরণ করেই সেই পথেই পুনরায় আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারে বাঘের। বাঘিনীর মূত্র মাটির সঙ্গে সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে সিমলিপালে ফেরার পথ তৈরি করা হয়। আর এই পথকেই বলা হয় ব্রিজিং। আর এই ব্রিজিং করে এবার সাফল্য পেতে চলেছে সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের কর্মীরা।
আরও পড়ুন – Snake: শীত তাই নিশ্চিন্ত, কিন্তু সত্যিই কী সাপের হানা হয় না, সাবধানে থাকুন
প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া রেঞ্জের এলাকায় বাঘ ঢুকে পড়েছে তা চাউর হওয়ার ফলে বাঘ দেখার জন্য দূর দূরান্তের বহু মানুষের ভিড় জমে। ফলে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার জন্য বাঘিনী এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তাই বনদফতরএবং স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ মানুষের ওই এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বনদপ্তর চেয়েছিল বাঘিনী কে নিরাপদ অনুভব করানোর জন্য। মানুষের যাতায়াত না থাকায় বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে বাঘিনীর মূত্র সংগ্রহ করা হয়। তারপর বাঘিনী যে জায়গায় রয়েছে সেখান থেকে শুরু করে সিমলিপাল যাওয়ার রাস্তা নির্ণয় করার পর সেই রাস্তায় ছড়ানো হচ্ছে তার মূত্র। এবার সেই পথ ধরে বাঘিনী ফিরতে চলেছে সিমলিপালের দিকে।
চাকুলিয়া রেঞ্জের সঙ্গে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের গিধনী রেঞ্জ ও জমবনি রেঞ্জের বর্ডার রয়েছে। তাই বাঘিনী কোনওমতেই ঝাড়গ্রামে ঢুকে না পড়ে তার জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ। বর্ডার এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর সংখ্যক বন কর্মী। প্রতিনিয়ত চালানও হচ্ছিল নজরদারি। শনিবার বাঘিনী ঝাড়গ্রাম জেলার প্রায় চার কিলোমিটার সামনে চলে আসায় চরম ও অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছিল ঝাড়গ্রামের মানুষের। এবার তা দূর হতে চলেছে বাঘিনী ফিরতে চলেছে তার ঘরে।
Buddhadev Bera