শুধু একটি পুজো নয়, এই দুর্গোৎসব যেন গোটা গ্রামবাসীর প্রাণের উৎসব। মণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে প্রতিমার কাজ, আলোসজ্জা থেকে পরিবেশনা, সব কিছুতেই একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন এলাকার মানুষজন। ক্লাবের সদস্যরা এখন দিন-রাত এক করে মগ্ন হয়ে আছেন প্রস্তুতিতে। এই উৎসাহ দেখে বোঝা যায়, পুজো কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং একত্রে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার মঞ্চ।
advertisement
৭৯ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস বুকে নিয়ে এগিয়ে চলা এই পূজা কমিটির প্রতিটি পদক্ষেপেই ফুটে ওঠে ঐতিহ্য আর নবত্বের মেলবন্ধন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে শুরু হওয়া এই দুর্গোৎসব আজ প্রজন্মের পর প্রজন্মের গর্ব। প্রতিবছর নতুন থিমের মাধ্যমে তারা দর্শনার্থীদের কাছে নতুন বার্তা পৌঁছে দেয়। এবারের থিম, জয়রামবাটি মাতৃমন্দির, নিঃসন্দেহে সেই ঐতিহ্যের আরেক উজ্জ্বল সংযোজন। গ্রামের নির্জন পরিবেশে দাঁড়িয়ে এমন মণ্ডপ যেন দর্শকদের শহরের পুজো দেখতে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তাই কমিয়ে দেয়। চারদিকে সবুজ মাঠ, কাঁচা পথঘাট, অথচ তারই মাঝে দাঁড়িয়ে উঠছে এক অপূর্ব সৃষ্টি। মণ্ডপশিল্পীরা যত্ন নিয়ে সাজিয়ে চলেছেন মন্ডপের প্রতিটি কোণ, আলো আর রঙের সংমিশ্রণে তৈরি করেছেন এক অনন্য পরিবেশ। প্রতিমাশিল্পীরাও তাদের সৃষ্টিকে থিমের সঙ্গে মানিয়ে তুলতে প্রাণপাত করেছেন।
এমন এক থিম পুজো ঘিরে আশেপাশের এলাকা থেকেই নয়, বাইরের দর্শনার্থীরাও ইতিমধ্যেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। পুজো উপলক্ষে স্থানীয় দোকানপাট, হাটবাজারেও বাড়ছে রমরমা। ফলে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও উৎসাহ ছড়িয়ে দিচ্ছে এই পুজো।একেবারে গ্রামবাংলার বুকে দাঁড়িয়ে শহরের বড় পুজোগুলিকে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই আয়োজন। শুধু পুজোর দিনে নয়, প্রস্তুতির মুহূর্ত থেকেই পটাশপুরের এই দুর্গোৎসব এক উৎসবে পরিণত হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক বড় চমক, আর স্থানীয়দের কাছে গর্বের প্রতীক।