উনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে সমাজে যখন নারী শিক্ষা ও আত্মপ্রকাশের সুযোগ সীমিত ছিল, সেই সময় দাঁড়িয়ে গিরিবালা দেবী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন এই রাধাগোবিন্দ মন্দির গড়ে তুলে। জানা যায়, তাঁর স্বপ্নে শ্রীকৃষ্ণ দর্শন দিয়ে নির্দেশ দেন এই মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই নির্দেশ অনুযায়ী তিনি গঙ্গার তীরে জমি দান করে, এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের মূল বিগ্রহ রাধা গোবিন্দর। এছাড়া মন্দির চত্বরে রয়েছে নহবত খানা। মূল মন্দিরের ডানদিকে রয়েছে ছয়টি শিব মূর্তিও।
advertisement
গঙ্গার ধারে মন্দির সংলগ্ন রয়েছে গিরিবালা দেবী ঘাট। মন্দিরে মোট চারবার পুজো হয়। সকাল সাড়ে ছ’টায় ঊষা কীর্তন, দশটায় নারায়ণ সেবা, বারোটায় মধ্যাহ্নকালীন ভোগ ও সন্ধ্যায় গঙ্গা আরতি। পাশাপাশি বিশেষ ভোগ নিবেদন করা হয় দেবতাকে। পুরোহিত এবং সেবকদের পূজোর পাশাপাশি থাকার ব্যবস্থাও সেই সময় করে দিয়েছিলেন গিরিবালা দেবী। দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের আদলেই তৈরি এই মন্দির।
মন্দিরে প্রতি বছর দোলপূর্ণিমা, ঝুলনযাত্রা, জন্মাষ্টমী, রাস পূর্ণিমা-সহ নানা উৎসব বিশেষভাবে পালিত হয়। জানা গিয়েছে, গিরিবালা দেবীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের তরফে এই মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি ট্রাস্টকে। তারাই বর্তমানে এখনও মন্দিরের যাবতীয় কাজ সামলাচ্ছেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও এই মন্দিরে একবার আসলে ভক্তদের শান্তি মিলবে নিশ্চিত। শান্ত পরিবেশে, ভোগ প্রসাদ খেতে চাইলে আগে থেকে কুপন কেটে সেবা নিতে পারেন ভক্তরা। ঘুরে দেখতে পারেন গঙ্গার ঘাট-সহ আশপাশও।
Rudra Narayan Roy