দেবী এখানে বর্গভীমা বা ভীমরূপা নামে অধিষ্ঠিত। ভৈরব সর্বানন্দ মতান্তরে কপালি। মহামায়া সতীর দেহাংশের মধ্যে বামগুল্ফ বা বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল এখানে । ১৪৬৬ খ্রিস্টাব্দে মুকুন্দ রামের চন্ডীমঙ্গল কাব্যে গোকুলে গোমতী নামা তাম্রলিপ্তে 'বর্গভীমা'এবং মার্কণ্ডেয় পুরাণে আছে দেবী বর্গভীমা উল্লেখ।ঠিক কত বছর আগে এই মন্দিরটি তৈরী হয়েছিল তার সঠিক তারিখ কেউ না বলতে পারলেও কথায় রয়েছে কুরুক্ষেত্রের ঘটনার সময় এই মন্দিরের স্থাপন।
advertisement
এটাও প্রচলন আছে যে অর্জুনের অশ্বও থামিয়ে ছিলেন এই তাম্রধ্যয রাজা । যাই হোক আজ থেকে ষাট সত্তর বছর আগেও এই তমলুক এলাকাতে মা বর্গভীমার পূজো ছাড়া আর কোনো দেব দেবীর পুজো হতো না। এখন মন্ডপে মন্ডপে মায়ের পুজো হলেও, এখানে নিয়ম রয়েছে বাড়ির পুজো হোক বা ক্লাবের, আগে মা বর্গভীমাকে পুজো দিয়েই অন্য সব জায়গায় পুজোপাঠ শুরু হয়। আজও সেই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন তমলুকের মানুষ। শ্যামা পুজো দিন এক প্রকার সারা রাত ধরে চলে মায়ের পুজো। তমলুকের বিভিন্ন ক্লাব প্রতিষ্ঠান বা যাদের বাড়ির পুজো সবাই ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে নাচ গান বাজনার সাথে মা বর্গভীমা মন্দিরে আসেন, পুজো দেন এরপর নিজের নিজের এলাকায় গিয়ে শ্যামা পুজোয় মেতে ওঠেন।
এবছর করোনা পরিস্থিতিতে কোন ভাবেই শোভাযাত্রা করা যাবে না বলে জেলা প্রশাসনের। প্রশাসন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, দু চারজন করে মানুষ বর্গভীমা আসবেন, পুজো দেবী বর্গভীমার পায়ে। যার ফলে বিগত বছর গুলোর মতো আজ সন্ধ্যায় দেখা যাবে না তমলুক শহরের কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের সেই উন্মাদনা। দেখা যাবেনা পদযাত্রা শোভাযাত্রা কোনো কিছুই।
Sujit Bhowmik