একটা সময় ছিল যখন জুতো বলতেই সবার প্রথমে মনে আসত বাটা-র কথা। তবে সেই বাটা কোম্পানি সমগ্র ভারতে তথা এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম জুতোর ফ্যাক্টরি তৈরি করেছিল কিন্তু হুগলির গঙ্গা তীরবর্তী এলাকা কোন্নগরে। তবে খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি সেই ফ্যাক্টরি। পরবর্তীতে কোন্নগর ছেড়ে বাটানগরের স্থানান্তরিত হয় সেই ফ্যাক্টরি। তবে আজও অতীতের সব ইতিহাস বহন করে রয়েছে তৎকালীন সময়ের সুবিশাল বাড়িটি।
advertisement
আরও পড়ুন- টেবিল জুড়েই ‘বিশ্ব ভ্রমণ’ মুর্শিদাবাদের এই রোড সাইড ধাবার মালিকের, বদরের ‘মুদ্রা’ কাহিনি
গোটা ভারতে বাটা সর্বপ্রথম তাদের আউটলেট খুলেছিল হুগলির কোন্নগরে। ১৯৩১ সালে বাটা শু কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। কোম্পানি ১৯৩২ সালে হুগলি নদীর তীরবর্তী একটি অঞ্চলে নিজেদের কোম্পানি স্থাপন করবে বলে ঠিক করে। সেই হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চল হচ্ছে হুগলির কোন্নগর। একটি ছোট্ট অপারেশন হিসেবে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় হুগলির কোন্নগর বাটার জুতোর ফ্যাক্টরি। ১৯৩৪ সালের জানুয়ারিতে বাটার অপারেশনে প্রথম আউটলেট তৈরি হয় কোন্নগরে।
কোন্নগরের যে অংশে বাটার প্রথম আউটলেট ছিল তার নাম আজও রয়ে গেছে কোন্নগর বাটার মোড়। একদম হুগলি নদীর তীরে বিশাল একটি ফ্যাক্টরির মধ্যে চালু হওয়ার কথা ছিল বাটা শু ইন্ডাস্ট্রির। কিন্তু স্থানীয় কিছু সমস্যার জন্য এই ইন্ডাস্ট্রি এখানে চালু হলেও এখান থেকে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুতার কোম্পানি তৈরি হলে চামড়ার গন্ধে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে, তাই জন্য এখানেই জুতার ফ্যাক্টরি তৈরি হয়েও স্থানান্তরিত করতে হয়।
আরও পড়ুন- ঝমঝমিয়ে নামছে… আর দু ঘণ্টায় তুমুল ঝড়, শিলাবৃষ্টি! তিন জেলায় বিরাট সতর্কতা
জানা যায়, তৎকালীন বাটা কোম্পানির যিনি কর্ণধার ছিলেন অর্থাৎ জন এন্টনিও বাটা বসতি স্থাপন করেছিলেন হুগলির কোন্নগরের এই বাড়িতেই। এখানে তিনি তাঁর বিবাহ সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তাঁর এক বছরের মধ্যেই বাটা কোম্পানি তা প্রথম এশিয়ার কারখানা তৈরি করে এখানে।
একেবারে গঙ্গার পাশে হওয়ায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য তারা একটি বন্দর তৈরি করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে তাদের প্রথম জুতোর ফ্যাক্টরি চালু করা হয়। সফলভাবে কাজ করে সেটি। কিন্তু স্থানীয় মানুষদের কারণে তাদের এই জুতোর ফ্যাক্টরি স্থানান্তরিত করে নিয়ে চলে যাওয়া হয় উত্তর ২৪ পরগনার বাটানগরে।
গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে বাটা সু তাদের প্রথম আউটলেট খেলেছিল কিন্তু কোন্নগরেই। আজ থেকে বছর কুড়ি আগে সেই আউটলেট বন্ধ হয়ে যায়। শুধুই রয়ে গেছে তার নাম। আগে যেখানে বাটার প্রথম আউটলেট ছিল সেখানে এখন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন কমপ্লেক্স। কিন্তু জায়গার নাম এখনও রয়ে গেছে বাটার মোড়।
রাহী হালদার