বর্তমানে অসুস্থতা তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জুড়ে থাকলেও তিনি দমে যাননি। এখনও মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি। নামমাত্র খরচে হাড় ভাঙা চিকিৎসা করছেন তিনি। গরিব মানুষের কাছে তিনি টাকা নেন না, বরং ঘুরিয়ে তাঁদের টাকা দেন বাড়ি যাওয়ার জন্য কিংবা ওষুধ কিনে নেওয়ার জন্য।
advertisement
তাই গরিবের কাছে তিনি ভগবান। করোনা হোক কিংবা তাঁর পরবর্তী সময়ে নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে এই বয়সেও করে চলেছেন চিকিৎসা। পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে জীবনের বেশ কয়েকটা দশক তিনি কাটিয়ে ফেলেছেন। এমন চিকিৎসকের উদ্যোগ ও ভাবনা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা চিকিৎসক যোগেন্দ্রনাথ বেরা। শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে স্বাস্থ্যবিভাগে সরকারি কর্মী হিসেবে যোগদান করেন। তাও প্রায় বছর চল্লিশের আগের কথা। এরপর তিনি স্বাস্থ্যবিভাগে নিজের দায়িত্ব সামলেছেন। এর পর তিনি শুরু করেন চেম্বার। স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করার সুবাদে চোখের সামনে দেখেছেন গ্রামীণ এলাকার মানুষের কষ্ট। তাঁদের যন্ত্রণা অনুভব করেছেন। তাই তিনি আর বাড়ি ফেরেননি, বেলদাতেই বাড়ি করে থেকে যান। এরপর শুরু করেন চিকিৎসা।
আরও পড়ুন- আর এক ঘণ্টাও নেই! ভয়াবহ দুর্যোগ ঘনাচ্ছে বাংলায়…! ঝড়-বৃষ্টিতে তথনচ হবে কোন কোন জেলা?
খাওয়ার পর মুখে রেখে দিন এক টুকরো মশলা…তাতেই ‘খেল’ খতম! ‘ন্যাচারাল’ টোটকায় জব্দ হাজার সমস্যা!
দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম এর বহু মানুষ তাঁর থেকে সুবিধা পেয়েছেন। নামমাত্র খরচেই তিনি দিয়েছেন এই চিকিৎসা। এখন তাঁর বয়স প্রায় ৮০ পেরিয়েছে। চাকরি করার সময়ে করেছেন চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করলেও এলাকার গরীব মানুষের জন্য তিনি কখনও নিজের ফি টুকুও নেন না। এখানেই থেমে নেই, কখনও নিজের খরচে ওষুধও দেন তাঁদের। ভাল খারাপ নিয়ে পথচলা যোগেন্দ্রনাথ বেরা গরিবের ভগবান। রাতবিরেতে যখন মানুষ সমস্যায় পড়েন অন্যান্য চিকিৎসক না পাওয়া গেলেও নিজের কথা না ভেবে তিনি চিকিৎসা পরিষেবা দেন। তিনি না পারলে দেন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
যখন কর্পোরেট যুগে ফিজের কারণে নামিদামি ডাক্তারবাবুদের থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পান না রোগী কিংবা পরিজনেরা সেখানেই সকলের কাছে দৃষ্টান্ত এই ডাক্তার। গ্রামীণ এলাকায় পরিচিত হাড়ভাঙা ডাক্তার হিসেবে। তবে চিকিৎসক যোগেন্দ্র নাথ বেরা লিখেছেন বহু বই, লিখেছেন নাটক, সিনেমার সংলাপ। একদিকে যেমন চিকিৎসা অন্যদিকে সাহিত্যকে বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের মধ্যে। বিজ্ঞান এবং সাহিত্য নিয়েই তার পথ চলা তবে মানুষের কাছে তিনি ভগবান।
রঞ্জন চন্দ