দীর্ঘ বহু বছর তিনি যুক্ত রয়েছেন শরীরচর্চার সঙ্গে। রাজ্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বহু সম্মান ও পদকও অর্জন করেছেন তিনি।এই বয়সেও তার প্রতিদিনের রুটিন শুরু হয় ভোরবেলা। সূর্য ওঠার আগেই তিনি মাঠে চলে যান এবং টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে কঠোর শরীরচর্চা ও অনুশীলন। গ্রীষ্মের দাবদাহ, বর্ষার প্রবল বৃষ্টি বা শীতের কনকনে ঠান্ডা কোনও কিছুই তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। অরূপ বাবু এই বিষয়ে জানান, “শরীরচর্চা কিছুটা নেশার পর্যায়ে পড়ে গিয়েছে। সেটাই ধরে রাখার চেষ্টা করছি এখনও পর্যন্ত।”
advertisement
আরও পড়ুনঃ ১ টাকাও লাগবে না! শুধু ঘুমের আগে এই ‘ছোট্ট’ কাজ তরতরিয়ে কমাবে কেজি কেজি ওজন! ৭দিনে ঝরবে মেদ
তার খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা শৈশব থেকেই গড়ে উঠেছিল। খেলার পরিবেশে বড় হয়ে ওঠার ফলে এখনও তিনি সেই অভ্যাস ধরে রেখেছেন। শিক্ষকতার ব্যস্ততা, পারিবারিক দায়িত্ব, দৈনন্দিন জীবনের নানা চাপ সামলানোর পরেও তিনি প্রতিদিন মাঠে যান, শরীরচর্চা করেন এবং নিজেকে সুস্থ রাখেন। অরূপ বাবু আরও বলেন, “আমি বর্ধমান রেলওয়ে বিদ্যাপীঠের ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাকেও আমি খেলতে গিয়েছিলাম। এছাড়াও দেশের মধ্যে আমি তামিলনাড়ু, ছত্রিশগড় সহ বিভিন্ন জায়গায় খেলতে গিয়েছি। এখনও আমাকে অনেক উন্নতি করতে হবে।”
বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের বেশিরভাগই মোবাইল আসক্ত। খেলার মাঠে এসেও মোবাইল গেম খেলতে দেখা যায় নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের। আর এদিকে ৬০ বছর বয়সেও শরীরচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক অরূপ সাহা। খেলার মাঠে উপস্থিত স্বপন দত্ত বলেন, “এই বয়সেও যেভাবে তিনি নিজেকে ফিট রেখেছেন, তা সত্যিই বিরল। তিনি শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নন, আমাদের শহরের গর্ব। তার জীবনযাপন ও শৃঙ্খলাবোধ নতুন প্রজন্মের জন্য বড় শিক্ষণীয় বিষয়।”
অরূপ কুমার সাহার জীবনযাত্রা প্রমাণ করে, যে বয়স কেবলমাত্র একটি সংখ্যা। ইচ্ছাশক্তি, কঠোর পরিশ্রম ও নিয়মিত অনুশীলন থাকলে জীবনের যে কোনও পর্যায়েই সুস্থ, কর্মক্ষম ও সফল থাকা সম্ভব। তার এই অধ্যবসায় এবং ক্রীড়া অনুরাগ শুধু বর্ধমান নয়, সমগ্র রাজ্যের মানুষের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী