সেদিনই শুরু হয় এক অনন্য সম্পর্ক—মানুষ আর পাখির! রক্তের নয়, কিন্তু নিখাদ ভালবাসার। গোপালবাবু টিয়া পাখির ছানাগুলোকে ঘরে তুলে আনেন। সন্তানের মত করেই বড় করে তোলেন তাদের। নাম দেন—একজন সূর্য, আরেকজন দীপা। দিনমজুরের ঘরে যা রান্না হয়, যা খায় গোপালবাবু পরিবার ঠিক তাই-ই খায় সূর্য আর দীপা। আলাদা কোনও খাঁচা নেই, কোনও বন্দিত্ব নেই। তারা থাকে পুরোপুরি স্বাধীন। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এই দুটি টিয়া কখনও গোপালবাবুকে ছেড়ে কোথাও উড়ে যায়নি। বাজারে গেলে, আত্মীয়ের বাড়ি গেলে, এমনকি মাঠে কাজে গেলেও গোপালবাবুর কাঁধে কিংবা পাশে পাশে চলে সূর্য আর দীপা। ওই দুই টিয়া পাখি যেন পরিবারেরই সদস্য হয়ে উঠেছে।
advertisement
এ বিষয়ে গোপাল দিন্ডা জানান, “ঝড়ের রাতে বাড়ির উঠোনে বাসা ভাঙ্গা অবস্থায় পড়েছিল দুটি টিয়া পাখির ছানা। তাদের তুলে এনে লালন পালন শুরু করি। কোনও খাঁচা বন্দি অবস্থায় নয়! খোলা অবস্থাতেই তাদের লালন পালন করা হয়।
কিন্তু বড় হওয়ার পর পাখি দুটি খোলা আকাশ পেয়েও উড়ে যায়নি। ভালবাসার টানে রয়ে গিয়েছে। বাড়িতে যা রান্না হয় তাই খায়। পরিবারের সদস্যের মতো নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে এই পাখি দুটি। এমনকি আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মোবাইলে কথাও বলতে পারে পাখি দুটি।”
পাখি দু’টি শুধু সঙ্গে থাকায় নয়, তারা কথা বলে। কখনও “মা”, কখনও “কাকু” বলে ডাক শোনা যায়। ফোন বেজে উঠলে, ওপার থেকে কেউ কথা বললে, তখন নিজের মত করে বকবক শুরু করে দেয় সূর্য আর দীপা। গ্রামের মানুষজন থমকে দাঁড়িয়ে দেখে এই দৃশ্য। খাঁচায় নয়, ভালবাসাতেই যে বন্ধন তৈরি হয়। জীবন্ত প্রমাণ গোপাল দিন্ডা আর তার দুই টিয়া পাখি।
কিসমত গ্রামের এই ছোট্ট গল্প আজ বড় শিক্ষা দেয়, ভালবাসা থাকলে ডানা থাকলেও কেউ ছেড়ে যায় না। বাড়িতে আরও দুটি শালিক পাখিও আছে তারাও মুক্ত ভাবে গোপাল বাবুর বাড়িতে বেড়ে উঠছে। আর গোপাল বাবুর পাখি গুলিকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান গ্রামবাসী থেকে দূর দূরান্তের মানুষ জন।





