প্রেসিডেন্সি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পড়াশোনা ত্যাগ করে স্বামী বিবেকানন্দের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। অবিভক্ত মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমায় অসহযোগ আন্দোলন থেকে ভারত ছাড়ো আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে যে তিনজন নেতার সুদৃঢ় নেতৃত্বে, তাঁরা সতীশ সামন্ত, অজয় মুখোপাধ্যায় ও সুশীল ধাড়া। অজয় মুখোপাধ্যায় ১৯৩০ সালে লবণ আইন সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
advertisement
আরও পড়ুন : মোবাইল ছেড়ে শুধু বই চাইবে শিশুরা, জেলা গ্রন্থাগারের ‘মাস্টারপ্ল্যান’
তমলুকের রাজবাড়ি থেকে নরঘাট পর্যন্ত লবণ তৈরির জন্য জনসাধারণের বিশাল মিছিলই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এর পরবর্তী সময়ে গ্রামে গ্রামে কংগ্রেসের সংগঠন গড়ে তোলার কাজে নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৪২ সালে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গড়ে উঠলে। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের দ্বিতীয় সর্বাধিনায়ক হন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৫২ সালের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে তমলুক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে জেতেন। ডক্টর বিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রিসভায় অজয় মুখোপাধ্যায় সেচ ও জলপথ বিভাগের মন্ত্রী রূপে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি গ্রাম-বাংলার অনেক জলাভূমি সংস্কার করেছিলেন।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশকে সতর্ক করল ভারত! বিপদসীমার ওপরে বইছে গঙ্গা
এর ফলে সেচব্যবস্থার প্রভূত পরিবর্তন হয়েছিল ও সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ বিশেষত তাঁর জন্মভূমি মেদিনীপুর জেলা কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করেছিল। অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় ১৯৬২ সালে তমলুকে ১২৫ শয্যা বিশিষ্ট মহকুমা হাসপাতাল তৈরি হয়। ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে বাংলা কংগ্রেস সহ চারটি দল একত্রে ‘পিপলস ইউনাইটেড লেফট ফ্রন্ট’ গঠন করে। জয়লাভ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলেন অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কিন্তু এই সরকার স্থায়ী হল না। এরপর অন্তর্বর্তী নির্বাচনেও জয়লাভ করে মুখ্যমন্ত্রী হন অজয়। ১৯৭১ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হন অজয়। কিন্তু মাত্র ৮৩ দিনে এই সরকারের পতন হয়। দীর্ঘ তিন বছর রোগ ভোগের পর ১৯৮৬ সালের ২৭ মে ৮৫ বছর বয়সে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবান ওয়ার্ডে অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়।