টাকির বাসিন্দা রমাকান্ত চৌধুরী ছিলেন বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের খাস উচ্চপদস্থ কর্মচারী । এই সময় বিভিন্ন কারণে তিনি প্রচুর অর্থবান হন এবং পরবর্তীকালে এই অর্থই জমি কেনার জন্য ব্রতী হন। তিনি তাঁর পৈতৃক ভিটের দক্ষিণে বাড়ি নির্মাণ করেন। তাঁর উত্তরসূরি কালিনাত মুন্সি জমিদারির ক্রয় করেন। কিন্তু কালীনাথ কোনও রাজোপাধি পাননি। সেজন্য টাকির জমিদাররা বিশাল ভূমিসম্পত্তির অধিকার হলেও কেউ রাজা উপাধি প্রাপ্ত সামন্ত রাজা ছিলেন না। তবে টাকির জমিদার কালীনাথ মুন্সির সঙ্গে জড়িয়ে আছে সমাজ সংস্কারের ইতিহাস।
advertisement
আরও পড়ুন : ‘তোর কাছে ‘Gen Z’ আর ‘Gen Alpha’-কে নিয়ে শেখাটা দারুণ লাগছে’…মেয়ে নবন্যার জন্মদিনে আন্তরিক পোস্ট জিতের
১৮২৯ সালের ডিসেম্বরে রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় রদ হওয়া সতীদাহ প্রথায় অন্যতম নায়ক ছিলেন কালীনাথ মুন্সী তা হয়তো আজ অনেকেরই অজানা। ইংরেজ আমলে সতীদাহ প্রথা রদ করতে রাজা রামমোহন রায় যে বিলে প্রথম স্বাক্ষর করেছিলেন তার দ্বিতীয় সইটি করেছিলেন এই বাড়ির কালীনাথ মুন্সি। ইংরেজরা তাঁকে রায়চৌধুরী উপাধি দিয়েছিলেন। দেশের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে সামিল ছিলেন তিনি। তার সাক্ষী টাকি রোড, টাকি সরকারি কলেজেও অনুদান ছিল তাঁর। এ বাড়ির জমিদার সূর্যকান্ত পুজোর সূচনা করেছিলেন। জানা যায়, রাজা রামমোহন রায়ের পরামর্শে এবং খ্রিস্টান মিশনারি আলেকজান্ডার ডাফের পরিচালনায় জমিদার কালীনাথ ১৮৩২ সালের ১৪ জুন টাকিতে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল স্থাপন করেন।
তার চেষ্টায় টাকিতে শিক্ষা-সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে। অবিভক্ত বাংলায় পুজো ঘিরে মেতে উঠত টাকি এবং সাতক্ষীরার শত শত মানুষ। দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার পরও সীমান্তে কড়াকড়ি কম ছিল বলে ওপার বাংলার মানুষ পুজোয় অংশ নিতে আসতেন। সব মিলিয়ে টাকিকে সমাজ সংস্কারের আঙ্গিকে উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছে কালীনাথ মুন্সি তা বলাই বহুল্য।