সাঁতারু গড়ার কারিগর তপন পানিগ্রাহী রাষ্ট্রপতির হাত থেকে দ্রোণাচার্য পুরস্কার পেয়েই নিজের শেকড়, নিজের ভালোবাসার শহর মহিষাদল আর মহিষাদলের মানুষজনকেই উৎসর্গ করলেন। তপন প্রাণিগ্রাহীর দ্রোনাচার্য পুরস্কার লাভে বাড়তি খুশি মহিষাদলের মানুষ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
শনিবারই রাষ্ট্রপতি ভবন মহিষাদলের সাঁতারু কোচ তপন পাণিগ্রাহীকে দ্রোণাচার্য পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। সম্মানিত করেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। ভারত সরকারের দেওয়া "দ্রোণাচার্য" ( লাইফ টাইম ) অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সাঁতার কোচ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের আদি বাসিন্দা তপন পানিগ্রাহী। তাঁর পুরস্কার লাভের খবরে খুশি বাংলার ক্রীড়া মহল। বাড়তি খুশি আপামর মহিষাদলবাসী।
advertisement
আরও পড়ুন- ফের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ! এবার বাবরের দলের বিরুদ্ধে বদলার দায়িত্বে রোহিত শর্মা
তপন পানিগ্রাহী মহিষাদল রাজ হাইস্কুলে পড়ার সময়ই আন্ত: স্কুল সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে নিজের যাত্রাপথের সুচনা করেছিলেন। সালটা ছিলো ১৯৭৪। সাফল্যের সেই শুরু। তারপর থেকে তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি মহিষাদলের সাধারণ পরিবারের এই ক্রীড়া পাগল মানুষটিকে। এরপর রাজ্য এবং জাতীয়স্তরে একের পর এক বহু সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।
বাড়ির পুকুর থেকেই তাঁর সাঁতারের হাতেখড়ি। পরে মহিষাদল রাজ হাইস্কুলের বড় পুকুর এবং হিজলি টাইডাল ক্যানেলেও তিনি অনুশীলন চালাতেন। ১৯৯১ সালে স্পোর্টস অথোরিটি অফ ইণ্ডিয়ার গুজরাটের গান্ধীনগর কমপ্লেক্সে সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। পরে সংস্থার দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রের পঞ্চভেলি সাই কমপ্লেক্সেও সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে অনেক বছর কাজ করেন।
নিজের মেয়ে অনন্যা পানিগ্রাহী, কোমল আথারে, প্রশান্ত কর্মকার, পুলকিত কুমারদের মতো প্রতিষ্ঠিত নামী সাঁতারুরা তাঁর হাতেই তৈরি। প্রশিক্ষণ পর্বে জাতীয় স্তরে আড়াইশোর বেশি এবং আন্তর্জাতিকস্তরে ষাটজনেরও বেশি প্রতিভাবান সাঁতারু তাঁর তালিমেই সাফল্য পেয়েছে। আর এত কিছুর জন্য তাঁর স্বীকৃতি সম্মানের তালিকাও বেশ লম্বা। ২০০৪ সালে সাই - এর সেরা কোচ পুরস্কার, ২০১২ মহারাষ্ট্র সরকারের ছত্রপতি শিবাজী পুরস্কার, ২০১৮ সালে ফিজিক্যাল এডুকেশন ফাউন্ডেশন অফ ইণ্ডিয়ার বেস্ট কোচ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
স্পোর্টস প্রমোশন ২০২০ ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডেও সম্মানিত এই বঙ্গসন্তান। আর চলতি ২০২১ সালে তাঁর দ্রোনাচার্য পুরস্কার লাভ যথেষ্টই খুশি বয়ে এনেছে সকলের জন্য। খুশি তপনবাবুর ভাই কঙ্কন, রঞ্জন, বিজন পানিগ্রাহীরা। খুশি মহিষাদলের ক্রীড়াপ্রেমী এবং সাধারণ মানুষজনও। সকলের বক্তব্য, তপন পানিগ্রাহী আমাদের গর্বিত করলেন।