তখন জঙ্গলের মধ্যেই ডাকাত দল কালী পুজোর সূচনা করেছিল। হাওড়া জেলার পাঁচলা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম। গ্রামে আজও লুট কালী পুজো হয় প্রতিবছর। জঙ্গল সাফ হয়ে বর্তমানে ঘন বসতি গড়ে উঠেছে সেখানে। ডাকাত দল আর নেই কালের নিয়মে। তবে আজও নিয়ম রীতি মেনে লুট কালী পুজোর আয়োজন হয়ে থাকে গ্রামে। প্রতি বছর পুজোর বেশ কিছুদিন আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়।নিয়ম অনুযায়ী প্রতিমা সাজ সরঞ্জাম থেকে প্রতিমার রূপ দেওয়া হয় পুজোর দিন। পুজোর দিন সকাল থেকে উৎসবের মেজাজ থাকে গ্রাম জুড়ে। সন্ধে নামলেই পুজোর ডালি নিয়ে হাজির ভক্তরা মায়ের কাছে। মায়ের কাছে করজোড়ে পুজো নিবেদন প্রার্থনা ভক্তদের।
advertisement
আরও পড়ুন: দীপাবলি হোক সবুজ! দূষণ-মুক্ত আলোর উৎসবে ঘর সাজান এই বিশেষ টর্চে!
সেই সঙ্গে সারা রাত্রি ব্যাপি হোম যজ্ঞ পুজো পাঠ হয়। মা কালীর সামনেই ভক্তদের দেওয়া পুজো ফল সামগ্রী বাঁশের ব্যারিকেট ঘেরা বা বেড়া দিয়ে রাখা হয়। তারপর নিয়ম অনুযায়ী সেই বেড়া ডিঙিয়ে একাধিকবার লুট হয় পুজোর প্রসাদ বা ফল। লুটের সময় পুরুষ মহিলা সকলেই প্রাণ প্রণে চেষ্টা করে মায়ের একটু প্রসাদ সংগ্রহ করতে। এটাই নাকি পাঁচলা সাহাপুর গ্রামের লুট কালী পুজোর রীতি।
আরও পড়ুন: আপেলের থেকেও উপকারী আতা! সব রোগের যম! ধরে রাখবে যৌবনও! জানুন
স্থানীয় মিঠুন ঘোষ জানান, পুজোর সূচনা সময় কাল জানা যায়নি। তবে লোকমুখে শোনা যায় ৩০০ -৪০০ বছরেরও আগে কথা। তখন জঙ্গল ডাকাতরা এই পুজোর সূচনা করেছিল। সেই পুরনো রীতি মেনে বর্তমানে মা কালীর পুজো করেন গ্রামের মানুষ।কালীপুজো মানে সর্বত্র বাজি পটকা ডিজে বক্সের তাণ্ডব হলেও পাঁচলা সাহাপুর গ্রামে ভিন্ন ছবি। এখানে মানুষ পুরনো রীতি মেনে মায়ের পুজোয় করে আনন্দ উপভোগ করেন।
মনে রাখতে হবে দীপাবলি মানেই অশুভ শক্তির দমন। আর সেই খুশিতেই ঘরে ঘরে আলো জ্বালিয়ে মানুষ উৎসবে মেতে ওঠেন! এই দীপাবলিতে আমাদের পরিবেশ রক্ষার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। যেমন বাজি পোড়ানো উচিত নয়। বাজি থেকে যে টক্সিক মেটাল নির্গত হয় তা খুব খারাপ। ইতিমধ্যেই দিল্লির মতো বহু জায়গায় দূষণের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছে। তাই আমরা বেছে নেব ইকো ফ্রেন্ডলি দীপাবলি!
বাজির বদলে আমরা নানা রকম প্রদীপ ও আলো জ্বালাবো। আমরা পুরোনো দিনের মতো করে প্রাকৃতিক আলোতে বা প্রদীপে ভরসা রাখবো। নানা রঙের ফুল দিয়ে ঘর সাজাবো। এমনকি হলুদ, চালের গুঁড়ো দিয়ে বাড়িতে আলপনা আঁকবো। আর এই দীপাবলিতে আমরা সবাই এক সঙ্গে থাকবো। আমরা এই সময় চেষ্টা করবো প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি থালা বাটি এসব ব্যবহার করার। দীপাবলি শেষ হলে যাতে সেসব আমরা নষ্ট করে ফেলতে পারি। মোট কথা দীপাবলি হোক আলোর উৎসব তবে দূষণ মুক্ত স্বচ্ছ দীপাবলি! ঠিক এই কালী পুজোর মতো করেই!
রাকেশ মাইতি