ভবানীপুরে মমতার বিজয়াসম্মিলনীর ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনী করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিকালে বিজেপির রাজ্য দফতরে এসে আগামী পরশু, ১৫ অক্টোবর, নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনী করার কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে গেলেন শুভেন্দু।
২১ এর বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জয়ী হন শুভেন্দু অধিকারী। পরবর্তীকালে, ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয়ী হন মমতা। বিধানসভায় ভবনীপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হবার পর, এটাই ছিল মমতার প্রথম বিজয়া সম্মিলনী।
advertisement
আরও পড়ুন
বিজয়া সম্মিলনীর রেওয়াজ তৃণমূলে নতুন কিছু নয়। কিন্তু, এবার পুজোর আগেই দলের তরফে সব বিধায়কদের কাছে, লিখিত নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ১১ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে সব বিধায়ককে তার বিধানসভা এলাকার প্রতি ব্লকে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে হবে। বিজয়া সম্মিলনীর ওই অনুষ্ঠান কেমন হবে, তাও ওই নির্দেশিকায় বলে দেওয়া হয়েছিল। এই দলীয় সিদ্ধান্তকে অনুসরন করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুরে বৃহস্পতিবার বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল তৃণমূল।
আরও পড়ুন- Beauty Tips: দামী ক্রিম ফেল! মুখের দাগ তুলতে আসলে কাজে আসে রান্নাঘরের ‘এই’ জিনিস
পর্যবেক্ষকদের মতে, অতীতে তৃণমূল, বিজয়া সম্মিলনী করলেও, তা ছিল মূলত মিলন উৎসবের মত। অনেকটা 'গেট টুগেদার 'ধাঁচের। বেশিরভাগ জায়গাতেই তা ছিল খানিকটা অবিন্যস্ত। সাংসদ, বিধায়কদের নিজস্ব উদ্যোগে হত অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা। কিন্তু, এবার সবটাই কেন্দ্রীয় ভাবে তৈরি, পরিকল্পিত। আর, ভবানীপুরের অনুষ্ঠান, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান, সে কারনে গোটাটাই খুবই 'সুপরিকল্পিত'। যে জন্য , মুখ্যমন্ত্রীর এই বিজয়া সম্মিলনীকে কটাক্ষ করে বিজেপি বলেছিল, ওটা হল কর্পোরেট বিজয়া সম্মিলনী। তবে, এটা ঠিক যে , মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কোনদিনই এভাবে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে আলাদা করে বিজয়া সম্মিলনীর আসরে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।
এদিকে বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের বিজয়া সম্মিলনী হওয়ার কথা থাকলেও, শেষ মূহুর্তে তা পিছিয়ে আগামী ২০ অক্টোবর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুভেন্দু। অভিযোগ না করলেও, কর্মসূচি পিছনোর জন্য বিধানসভার, দেরিতে অনুমোদন দেওয়াকেই দুষেছেন শুভেন্দু। তবে, পরিষদীয় দলের সঙ্গে বিজয়া সম্মিলনীতে মিলিত হবার আগেই শনিবার নিজের কেন্দ্র নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মিলনী করতে চলেছেন শুভেন্দু।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে পাল্লা দিতেই নাকি তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে শুভেন্দুকে। এর আগে, পুজো উদ্বোধনের দৌড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে, মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়াল উদ্বোধন কর্মসূচি নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছিল বিজেপি। তিনি যে কোন অংশে মমতার থেকে কম নন, তা বোঝাতে,আজও ঘরোয়া আড্ডায় শুভেন্দু দাবি করেছেন, দশমীর রাত পর্যন্ত তিনিও কয়েকশো পুজোর উদ্বোধন করেছেন।
এমনকি, ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধনের প্রস্তাবও এসেছিল বীরভূমের মত জেলা থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তার সঙ্গে তুলনা টেনে শুভেন্দুর আরও দাবি, তার প্রতিটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানই নাকি কার্যত ছোটখাটো জনসভাতে পরিণত হয়েছিল। যদিও, তৃণমূলের মতে, ,পুজো উদ্বোধনের দৌড়ে মমতার সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে,এবার বিজয়া সম্মিলনী ইস্যুতে আবার মমতাকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা শুভেন্দুর।
ফলে, আগামী শনিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর এই কর্মসূচির দিকে নজর থেকে রাজ্য রাজনীতির।
ARUP DUTTA