নন্দীগ্রাম দিবস পালনের অনুমতি নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় এবারেও কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো এ দিন সকালে দু' ঘণ্টা শহিদ স্মরণের অনুমতি পায় বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও গোকুলনগরের অনুষ্ঠান হয় ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নামে।
আরও পড়ুন: কালীঘাটে আসছেন অখিলেশ, চলতি সপ্তাহেই বৈঠক মমতার সঙ্গে! থাকবেন অভিষেকও
advertisement
এ দিন সকালে প্রথমে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের অধিকারী পাড়ায় শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিরোধী দলনেতা। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'নন্দীগ্রাম আন্দোলন কোনও নির্দিষ্ট দল, নেতানেত্রীর আন্দোলন ছিল না। এটা ছিল জনগণের আন্দোলন। এখানে সবার অধিকার আছে। সব রাজনৈতিক দলের আছে। এখানে কি যুদ্ধ হবে? কেন্দ্রীয় বাহিনী, হাইকোর্ট, সাজো সাজো রব। মানুষ খেতে পায় না, চাকরি পায় না।' প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকে একাধিকবার নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্বকে অস্বীকার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পরোক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এবং অধিকারী পরিবার না থাকলে নন্দীগ্রামে ঢোকাই সম্ভব হত না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে।
নিজের বিজেপি-তে যোগদানের পক্ষে সওয়াল করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, '২০০৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী খালি শহিদদের সেবক নয়, প্রত্যেক বছর এসে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেছে, নীরবতা পালন করেছে৷ রাজনৈতিক দলমত পরিবর্তন প্রত্যেকে করতে পারে৷ আমাকে তৃণমূল যে সমস্ত পদ এবং জায়গা দিয়েছিল, তা দিয়েছিল বাধ্য হয়ে, দয়া করে দেয়নি৷ আমি সবকিছু ছেড়ে সাধারণ মানুষের মতো বিজেপি-তে যোগ দিয়েছি৷ সংবিধান আমাকে সেই অধিকার দেয়৷'
আরও পড়ুন: শান্তনুর ফোন 'সোনার খনি', কী পেলেন তদন্তকারীরা? আদালতে বিরাট দাবি ইডি-র
পাশাপাশি ফের একবার নন্দীগ্রামের মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর গলায়। এ দিন বিরোধী দলনেতা বলেন, 'এমনিতেই ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছি, বাকি যা আছে সাফ করব। সিপিএমকে সাফ করেছি, পিসি-ভাইপোকে গ্যারেজ করব৷ আগামী বছর দেখা হবে। তখন ভাইপো বাইরে থাকবে না ভিতরে থাকবে। লক্ষ্মণ শেঠদের যা অবস্থা হয়েছে, আপনাদের অবস্থাও তাই হবে।'
এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। গোকুলনগর থেকে সোনচূঁড়ায় শহিদ বেদীতে গিয়েও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি। বিজেপি-র পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।
যদিও শুভেন্দুর পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'নন্দীগ্রামের মানুষের আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বের দরবারে নিয়ে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ কথা সবাই জানে৷ বিজেপি-তে যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত শুভেন্দু নিজেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেত্রী বলে স্বীকার করেছেন৷ নিজে সিবিআই-ইডি থেকে বাঁচতে বিজেপি-তে গিয়েছেন৷ তবে ভবিষ্যতে ওকেও জেলে যেতে হবে৷ এই পাপ নিয়ে সারাজীবন চলতে পারে না৷'