সোমবারের মুর্শিদাবাদের সভায় শুভেন্দু অধিকারীর ৩০ মিনিট বক্তব্য রাখার আগাগোড়াই ছিল শাসক দল ও সরকারকে নিশানা করে একের পর এক আক্রমণ। কখনও আবাস যোজনায় দুর্নীতি, কখনও পুলিশকে হুঁশিয়ারি, আবার কখনও বা শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস অত্যাচার-সহ নানান অভিযোগ।
আরও পড়ুন: শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে ঘন কুয়াশায় নাস্তানাবুদ! এবার বন্ধ হল স্কুল! IMD-র লাল সতর্কতা জারি
advertisement
শুভেন্দু এদিন বলেন,' আপনারা নির্ভয়ে কাজ করুন। গ্রামে গ্রামে পদ্ম ফোটান। ভয় পাবেন না। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। ১৪- এর লোকসভা ভোটে তৃণমূল তৃতীয় স্থান পেয়েছিল। ভোট প্রাপ্তি ছিল মাত্র ১৪ শতাংশ। এতদিন মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোট লুঠ করে এসেছে। এবার আপনার দেখতে পাবেন ভোট কাকে বলে। গণতন্ত্র কাকে বলে। কী ভাবে তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের জব্দ করতে হয় আমরা তা করে দেখাব'।
এদিনের সভা থেকে তৃণমূল তথা সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন,' আমরা চাই সঠিক সময় ভোট হোক। কিন্তু ভয় মুক্ত পরিবেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পক্ষে আমরা। ভারত বিরোধীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগলে রেখেছেন। উনি বলেন যে বিজেপি নাকি সাম্প্রদায়িক দল। আরএসএসের কথাই চলে। কিন্তু বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়। সাম্প্রদায়িক দল যদি কেউ হয় তাহলে তা তৃণমূল'। শুভেন্দুর কথায়,' মুর্শিদাবাদ জেলার পুরোটাই আমার হাতের তালুর মত চেনা। তাই তৃণমূলকে মুর্শিদাবাদ থেকে উৎখাত করেই ছাড়ব'।
আরও পড়ুন: আপনি কি রান্নার আগে চিকেন ধুয়ে নেন? সাবধান! বিরাট ভুল করছেন! জীবনের বড় ঝুঁকি
এদিন সিএএ প্রসঙ্গে সওয়াল করেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, 'সিএএ আইনে কাউকে তাড়ানোর কথা বলা নেই। বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের উপর অত্যাচার করে বিতাড়িতদের সহ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন এটা। এই আইনে কাউকে তাড়ানোর কথার উল্লেখ নেই। তবে আইন যখন লাগু হয়েছে তখন তা কার্যকর হবেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যা বলেন তা করে দেখান'।
বিজেপি যে সংখ্যালঘুদের বিরোধী সেই অভিযোগের তোপ উড়িয়ে দিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য,' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু সংখ্যালঘুদের বিজেপি জুজু দেখান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে বিজেপি এলেই তাদের বাংলা থেকে তাড়িয়ে দেবে বলে সব সময় ভুল বোঝান'। উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বলেন,' যোগী আদিত্যনাথ কী কাউকে তাড়িয়ে দিয়েছেন? ওখানেও তো প্রচুর সংখ্যালঘু রয়েছেন। বিজেপি ধর্ম দেখে না। সম্প্রদায় দেখে না। সবার জন্য কাজ করে'।
'গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেরা কাজ করুন। জোট বাঁধুন। নিজেদের হকের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধার জন্য প্রশাসনকে চাপ সৃষ্টি করুন। মুর্শিদাবাদের মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মী সমর্থক নেতৃত্বকে এই বার্তা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য,' আপনারা কষ্টে আছেন আমি জানি তাও ঐক্যবদ্ধ হন। তৃণমূলের অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই সমাধান, তা হল ডবল ইঞ্জিন সরকার।' পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, 'আপনারা শুধু সনাতনী বুথগুলোতে পদ্মফুল ফুটিয়ে দিন। আর সংখ্যালঘু বুথগুলোতে পদ্ম ফুটবে কিনা জানি না, কিন্তু জোড়াফুল ফুটবে না, তার ব্যবস্থা আমি করে দিয়েছি, বাকিটাও আমি করব। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে মুর্শিদাবাদ জেলায় দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল মুক্ত করব'।