২০২১-২২ সালে হয়েছিল সর্বশেষ অল ইন্ডিয়া টাইগার এস্টিমেশান। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর এই এস্টিমেশানের কাজ করে দেশের সমস্ত ব্যাঘ্র প্রকল্প। মূলত জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসিয়ে বাঘেদের ছবি তোলা হয়। নির্দিষ্ট সময় পর সেই ক্যামেরা খুলে নেওয়া হয়। ক্যামেরায় ওঠা বাঘেদের ছবি বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ঠিক একই পদ্ধতিতে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পও নিজেদের মত করে তাঁদের এলাকায় বাঘেদের পরিসংখ্যান নিয়ে থাকে। গত নভেম্বর মাসের শেষে গভীর জঙ্গলে ইনফ্রা-রে প্রযুক্তি সম্বলিত স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসিয়ে এবার ৪৫ দিন ধরে চলেছে বাঘেদের ছবি তোলার কাজ। ছবি ওঠার পর সেই ছবি বিচার বিশ্লেষণ করে সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা নির্ধারণ করেছে ব্যাঘ্র প্রকল্প। মোট ৭২২ টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় এবারের বাঘ সুমারিতে। প্রায় ৩৫০ বনকর্মী এই ক্যামেরা বসানোর কাজ করেন।
advertisement
বন দফতর সূত্রের খবর, এবারের বাঘ সুমারির ফলাফল যথেষ্ট ইতিবাচক। সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। সুত্রের খবর প্রায় ১০ থেকে ১২টি বাঘ বেড়েছে জঙ্গলে। বনদফতরের দাবি গত দু তিন বছর ধরে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে জঙ্গলে প্রচুর ব্যাঘ্র শাবক দেখা গিয়েছে। ২০২১-২২ সালে যে শাবকের ছবি মিলেছিল সেগুলি এখন বড় হয়েছে। এমনকি পরের বছরগুলিতেও একই ভাবে শাবকদের ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। শেষ সর্বভারতীয় ব্যাঘ্র সুমারিতে পাওয়া সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যার তুলনায় আরও কিছু বাঘ বেড়েছে সুন্দরবনে। তার প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি শেষ হওয়া বাঘ সুমারিতে।
১ বছরের নীচে যে সমস্ত শাবকের বয়স সেগুলিকে গণনায় ধরা হয় না। গত কয়েক বছরের ছবি অনুযায়ী সেই শাবকের সংখ্যাও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে জঙ্গলে। পাশাপাশি ১ থেকে ৩ বছর বয়সী বাঘের সংখ্যাও ২০ শতাংশের মতো ছিল বলে দাবি বন দফতরের। ফলে গত দু তিন বছরে যে সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা যে যথেষ্ট বেড়েছে সে সম্পর্কে কোনও সন্দেহ নেই বলেই দাবি বন দফতরের। সুন্দরবনকে বাঘেরা নিজেদের জন্য নিরাপদ স্থান মনে করছে, আর সেই কারণে বাঘেদের প্রজনন খুব ভাল ভাবে হচ্ছে এখানে, দাবি বনদফতরের। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলেও মনে করছেন তাঁরা।