TRENDING:

Howrah News: উলট পুরাণ! এই গ্রামে পাত্তা পায় না বেসরকারি স্কুল, 'ফ্যাশনে' না গিয়ে অভিভাবকরা সন্তানদের ভর্তি করেন সরকারি স্কুলেই

Last Updated:

ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়তে ভরসা গ্রামের প্রাথমিক স্কুল।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
হাওড়া: এ যেন উলট পুরাণ হাওড়ার গ্রামে, শিশুদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ভরসা সরকারি প্রাথমিক স্কুল। যখন সর্বত্র বেসরকারি স্কুলের দাপট বেড়ে চলেছে। ফলে কোন ঠাসা হয়ে পড়ছে সরকারি মাধ্যমের স্কুলগুলি। ছাত্রের অভাবে সরকারি বহু স্কুল তালা বন্ধ হয়ে পড়ছে। কিন্তু যদি এমন হত শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থী ও গ্রামের অভিভাবকদের একমাত্র ভরসা সরকারি স্কুল। ঠিক এমনই ঘটনা হাওড়ার শ্যামপুরের এক গ্রামে। যেখানে ২০২৪-২৫ চালু হতে যাওয়া শিক্ষাবর্ষে গ্রাম জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। সরকারি স্কুলের দাপটে, হাওড়া শ্যামপুরের এই গ্রামে ঢুকতে পারে না বেসরকারি স্কুলের গাড়ি। কোথাও শিক্ষকের অভাব আবার কোথাও দেখা দিয়েছে ছাত্রের অভাবে ধুঁকছে রাজ্যের একাধিক সরকারি স্কুল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোড়ে মোড়ে ছাতার মত গজিয়ে উঠছে বেসরকারি স্কুল।
advertisement

বেসরকারি স্কুলের বাড়বাড়ন্ত। কয়েক বছরে দেখা গেছে গ্রাম ও শহরে অভিভাবক বেসরকারি স্কুলের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। ফলে ক্রমশ বেসরকারি স্কুলে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। যদিও ইদানিংকালে পড়ুয়াদের সরকারি স্কুল মুখী করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারিভাবে। বছরের বিভিন্ন সময় খাদ্য মেলা, বইমেলা , কিচেন গার্ডেন , শিশু সংসদের মত একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ ও পালন করতে দেখা যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে। এছাড়াও পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি সরকারি স্কুলে নাচ, গান আবৃত্তি ব্যয়াম ছবি আঁকার মত বিভিন্ন শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিতে। তাতেই যেন সরকারি স্কুলগুলি পাল্লা দিয়ে উঠতে পারছে না বেসরকারি স্কুলের সঙ্গে। সেই আবহে এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। বারগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সজনাগাছি গ্রামে ঢুকতে পারে না বেসরকারি স্কুল গাড়ি। এই গ্রামের কোনও পড়ুয়াই নাকি, বেসরকারি স্কুলে যায় না। বেসরকারি স্কুলে যাওয়ার সেভাবে আগ্রহ নেই গ্রামের মানুষের। এমনকি এই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকেও ছাত্র-ছাত্রী আসে। গনেশপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার সত্ত্বেও সেখান থেকে পড়ুয়ারা আসে সজনাগাছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অন্যদিকে সজনেগাছি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে একাধিক বেসরকারি স্কুল। তবুও গ্রামের অভিভাবকরা সন্তানদের বেসরকারি স্কুলের পরিবর্তে সরকারি সজনাগাছি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই ভর্তি করেন।

advertisement

আরও পড়ুন: শীত তাই নিশ্চিন্ত, কিন্তু সত্যিই কী সাপের হানা হয় না, সাবধানে থাকুন

আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

View More

একাংশের অভিভাবকদের দাবি প্রকৃত শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা। ফলে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গড়তে আদর্শ এই প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত কয়েক বছরে এই বিদ্যালয়ে পড়াশুনার গুণগতমান আরও ভাল। প্রতিবছরই বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বৃত্তি পরীক্ষায় ভাল ফল করছে। পড়ুয়াদের অত্যন্ত যত্ন সহকারে পাঠদান করেন। অন্য এক অভিভাবক বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি এই স্কুলের মিড মিলে যে খাবার দেওয়া হয় তা পড়ুয়াদের জন্য অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।

advertisement

আরও পড়ুন: মা তো মা-ই হয়! হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে যা করল বনবিড়াল, দেখুন মন ভাল করা ভিডিও

এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল গরানী বলেন, “আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই এই এলাকার অভিভাবকদের সরকারি বিদ্যালয়ের ওপর আস্থা রাখার জন্য। বর্তমানে এই স্কুলে একজন শিক্ষিকা সহ মোট চারজন শিক্ষক রয়েছি। ইদানিংকালে আমার দেখছি সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করানটা অভিভাবকদের কাছে একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ম থেকে ব্যতিক্রম পার্শ্ববর্তী গ্রামের অভিভাবকরা।”

advertisement

এছাড়াও তিনি দাবি করেন, “২০১৭ সালে প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমি সংকল্প নিয়েছিলাম এই গ্রামের কোন পড়ুয়াকে আমরা হাতছাড়া করব না।তাই আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার পরিকাঠামোর পরিবর্তন করেছি। পড়াশুনার মান উন্নত করতে পাঠ্য বই ছাড়াও বিভিন্ন বই ও প্রশ্ন বিচিত্রা অনুসরন করে আধুনিক মানের শিক্ষা প্রদান করি। প্রতিবছর আমাদের বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়ারা বৃত্তি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়। মিড মিলেও পড়ুয়ারা পুষ্টিকর, খাদ্য গ্রহণ করে। বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো সহ মনীষীদের জন্মদিন উদযাপন সহ বাৎসরিক অনুষ্ঠান আয়োজন করি। গত বছর আমরা অভিভাকদের উপস্থিতিতে পিঠে পুলি উৎসবের আয়োজন করেছিলাম, সেখানে পড়ুয়াদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। এবারও আমরা পিঠেপুলি উৎসব ও কাছেপিঠে শিক্ষামূলক ভ্রমণের ব্যবস্থা করছি। আমরা অভিভাবকদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম তাঁদের সন্তানদের যেন বেসরকারি স্কুলে ভর্তি না করে। সেই আহ্বানে তাঁরা ভাল সাড়া দিয়েছেন। বিগত কয়েক বছর যাবত সজনাগাছি গ্রামের কোন পড়ুয়া বেসরকারি স্কুলে যায় না। এটা আমদের সৌভাগ্যের আর এই কৃতিত্বের অংশীদার আমাদের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমীর দোলই, দেবশ্রী প্রধান, শুভ কুন্ড সহ মিড ডে মিল প্রস্তুতকারী দিপা মাইতি ও চন্দানী মাইতি প্রত্যেকেই। ওনাদের সহযোগিতা ছাড়া বিদ্যালয়ের এই সাফল্য সম্ভব ছিল না।” তবে এই সাফল্য বিদ্যালয় কত দিন ধরে রাখতে পারে সেটাই দেখার বিষয়।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
১৭ রাজ্য পাড়ি দিয়ে শান্তির বার্তা — স্কুটিতে একা অভিযানে বর্ধমানের শিক্ষিকা
আরও দেখুন

রাকেশ মাইতি

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Howrah News: উলট পুরাণ! এই গ্রামে পাত্তা পায় না বেসরকারি স্কুল, 'ফ্যাশনে' না গিয়ে অভিভাবকরা সন্তানদের ভর্তি করেন সরকারি স্কুলেই
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল